খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১২ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহে ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের মৃত্যু
  এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যা নিয়ে দুনিয়ার সামনে গর্ব করা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা-বিপণনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

নগরীতে গৃহবধুর মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা মহানগরীর ৪ নং মাছ ঘাট এলাকায় সাথী বেগম (২২) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোবাবার সকালে খুলনা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর রহস্য নিয়ে নানা গুঞ্জন উঠেছে। এ জন্য এলাকাবাসি নিহতের সৎ মা, খালা ও নানীকে দায়ী করে বলেছে, তাদের আঘাতের কারণে সাথী বেগমের মৃত্যু হয়েছে। নিহত নারী ওই এলাকার জামাল শেখের বড় মেয়ে।

এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, জামাল শেখ দু’কন্যা নিয়ে ৪ নং মাছ ঘাট এলাকায় বসবাস করেন। ১১ বছর আগে তাদের ছেড়ে মা অন্যত্র বিয়ে করে। সন্তানদের দেখভাল করার জন্য জামাল পুনরায় বিয়ে করে। এরপর থেকে তাদের ওপর নেমে আসে সৎ মায়ের অত্যাচার।

৮ বছর আগে ৪ নং মাছ ঘাট এলাকার সবুজ শেখ নামে এক যুবকের সাথে তার বিয়ে হয়। কিছুদিন সংসার করার পর সবুজ অন্যত্র একটি বিয়ে করে। সাথী বাবার বাড়িতে চলে আসে। সৎ মা এটি কোনভাবে মেনে নিতে পারেনি। পান থেকে চুন খসলে সৎ মা তার ওপর অত্যাচার করতো, এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এলাকাবাসী আরও জানান, ৫ জুলাই দুপুরে জামাল শেখের সাথে দ্বিতীয় স্ত্রী রাহেলার কথা কাটাকাটি হয়। এসময় সাথী তাদের গন্ডগোল করতে নিষেধ করে। এরপর জামালের অনুপস্থিতিতে সাথীর ওপর চলে অত্যাচার। সাথীকে শায়েস্তা করার জন্য রাহেলা তার মা ও বোনকে ডেকে ওই বাড়িতে নিয়ে আসে। তারা তিন জন মিলে সাথীর শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করতে থাকে। পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সাথীকে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। ওইদিন থেকে সাথী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। পাশ্ববর্তী ফার্মেসী থেকে ঔষধ এনে তাকে খাওয়ান হয়। কিন্তু কিছুতে তার রক্ত পড়া বন্ধ হয়না। আজ রবিবার সকালে রুটি ও চা খাওয়ার পর নিস্তেজ হয়ে পড়ে সাথী। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সাথীর ৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহত সাথীর ছোট বোন সুমাইয়া বলেন, বড় আপার সাথে স্বামীর ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকে বাবার বাড়িতে অবস্থান করে সাথী। এটা তার সৎ মা কোনভাবে মেনে নিতে পারেনি। কোন কিছু হলেই সৎ মা তার ওপর অত্যাচার করত। সেদিন তাকে বেদম প্রহার করেছে তিন জন মিলে। তাকে কোন চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়নি বা কোন চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বিনা চিকিৎসায় আমার বোনটি মারা গেল। এখন এ ছোট বাচ্চার কি হবে এটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। তিনি বোনের মৃত্যুর জন্য সৎ মাকে দায়ি করেছেন।

নিহতের স্বামী সবুজ বলেন, গত রাতে তাকে ফোন দিয়ে জানানো হয়েছে সাথী বেগম অসুস্থ। সকালে হাসপাতালে এসে দেখেন সে মারা গেছে। এ মৃত্যুর বিচার চান তিনি।

এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার পরিদর্শক টিপু সুলতান বলেন, একটা মৃত্যুর খবর তিনি শুনেছেন। ওই নারী জ্বরে আক্রান্ত ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ নারীটি মারা গেছেন। হত্যা করা হয়েছে কি না তা তিনি পরিস্কার করে বলতে পারেনি। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে খুলনা থানার এস আই লতিফা রহমান পপি বলেন, মোবাইল ডিউটি করছিলেন তিনি। মৃত্যুর কথা জানতে পেরে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে তার লাশের সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করেন। তিনি বলেন, মরদেহের শরীরের বুকে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রির্পোট এলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

খুলনা গেজেট / আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!