দুর্নীতির মামলায় যশোরের নওয়াপাড়ার মেসার্স সৌরভ এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ মাসুম উল ইসলামকে আট বছর সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত শেখ মাসুম উল ইসলাম খুলনা সদরের মির্জাপুর গ্রামের শেখ সিরাজুল ইসলামের ছেলে ও যশোরের অভয়নগর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। এছাড়া এ মামলার অপর আসমি ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের মৃত্যু হওয়ায়
তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগরের নাওয়াপাড়া ইউসিবিএল ব্যাংক বাজার শাখায় ২০০২ সালের ২ মে থেকে ২০০৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন মনিরুজ্জামান। ওই সময় মেসার্স সৌরভ এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ মাসুম উল ইসলামের নামে এ ব্যাংকে একটি হিসাব খোলেন। পরবর্তীতে ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান নিজে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দেয়া সীমা লংঘন করে এক কোটি ৩০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭৮ টাকা অতিরিক্ত ঋণ প্রদান করেন মাসুমকে। অতিরিক্তি ঋণ মঞ্জুরের ফলে তিনি ব্যাংকের এক কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ১৬১ টাকার ক্ষতি করেছেন। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় ইউসিবিএল ব্যাংক নওয়াপাড়া শাখার ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২০০৯ সালের মে মাসে দুর্নীতি দমন আইনে মনিরুজ্জামানকে আসামি করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, শাখা ব্যবস্থাপক শেখ মনিরুজ্জামানের ফুফাতো বোনের ছেলে সৌরভ এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ মাসুম উল ইসলাম। তারা অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে অতিরিক্ত টাকা ঋণ প্রদান করে ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতি করে। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাক্ষীদের বক্তব্য ও ব্যাংকের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান ও তার ভাগ্নে মাসুমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী।
২০২২ সালের ১৬ আগস্ট স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানের মৃত্যু হওয়ায় তাকে অব্যাহতি ও মাসুম উল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪০৯ ও ৪২০ ধারায় অভিযোগ গঠন করে সাক্ষীর দিন ধার্য করেন। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি মাসুম উল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪০৯ ধারয় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ডও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড ও ৪২০ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন বছর সশ্রম কারাদ-, ১০ হাজার টাকা জরিমনা অনাদায়ে আরও চার মাসের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন। রায়ে সাজা একই সাথে চলবে বলে উল্লখ করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত মাসুম উল ইসলাম বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি