যশোরে সাবেক স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টার সময় পুলিশের হাতে আটক ঘাতক সালাউদ্দিন গাজী হাসপাতালে মারা গেছেন। ১১ অক্টোবর বিকেলে সাবেক স্ত্রী নুর নাজমাকে হত্যার পর রাতে তিনি পুলিশকে ফোন করেন। আর পুলিশ গিয়ে বাড়ির পাশের একটি বাগানে বিষপান অবস্থায় তাকে আটক করেন। হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, এনজিও থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নেন নাজমা। আর সেই টাকা হাতাতেই এই হত্যাকান্ড ঘটায় সালাউদ্দিন। যশোর গোয়েন্দা শাখার একটি টিম ওই হত্যাকান্ডের পর মাঠে নেমে এ তথ্য পেয়েছে।
গত ১১ অক্টোবর বিকেলে সাবেক স্ত্রী নূর নাজমা বেগমকে রক্তাক্ত অবস্থায় সদর উপজেলার গোয়ালদহ গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে আনার বহু আগেই ওই নারীর মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়, তার সাবেক স্বামী সালাউদ্দিন গাজী নাজমাকে কুপিয়ে ও গলাকেটে গত্যা করে। এদিকে হত্যার পর গা ঢাকা দেয়া সালাউদ্দিন, রাতে এলাকায় দেখে পুলিশে খবর দেন এলাকার লোকজন। এসময় গোয়েন্দা শাখা পুলিশের এসআই সোলাইমান আক্কাস ও এসআই মাইদুল ইসলাম অভিযান পরিচালনা করেন।
এসআই সুলাইমান আক্কাস জানিয়েছেন, ওই রাতে সালাউদ্দিনই সারেন্ডার করার জন্য পুলিশকে খবর দেন। আর তিনিসহ এসআই মাইদুল ইসলাম গিয়ে দেখেন ঘাতক সালাউদ্দিন বাগেরহাট এলাকার একটি বাগানে বিষপান করে পড়ে আছেন। তাৎক্ষণিক তাকে আটক করা হয়। আর বিষপান অবস্থায় থাকায় তাকে ওই রাতেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
হত্যাকান্ডের শিকার সাবেক স্ত্রী নূর নাজমা বেগম (৩০) যশোর সদর উপজেলার গোয়ালদহ মিয়াপাড়া এলাকার মশিউর রহমানের মেয়ে। হত্যার পর আত্মহত্যা করা সালাউদ্দিন গাজী (৪১) একই গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন গাজীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, নানামুখী নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে নূর নাজমা বেগম ৪ মাস আগে সালাউদ্দিন গাজীকে তালাক দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে সালাউদ্দিন তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরমধ্যে নাজমা একটি এনজিও থেকে দুই লাখ টাকা লোন নেন। সেই টাকা নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে সালাউদ্দিন। কিন্তু নুর নাজমা কোনো অবস্থাতেই ওই টাকা হাত ছাড়া করতে চাননি। তিনি বাবার বাড়িতে ৩ সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন।
১১ অক্টোবর সকালে সালাউদ্দিন সাবেক শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে নূর নাজমা বেগমকে গালাগাল করেন এবং হত্যা করেই ছাড়বে বলে হুমকি দিয়ে আসেন। আর এদিনই বিকেলে নাজমাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।
খুলনা গেজেট/কেডি