দুই বছর তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবারও ভারত বাংলাদেশের বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। সকাল ৯ টার দিকে বাসটি কলকতার করুনাময় টার্মিনাল থেকে ২৮ জন যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
সন্ধ্যা ৭ টা ৫৩ মিনিটের দিকে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পুলিশ নিরাপত্তায় খুলনার নিউমার্কেট এলাকায় পৌছায়। এসময় বাসের যাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল্ ইসলাম। খুলনার মানুষের অর্ভ্যথনায় মুগ্ধ হন বাসের যাত্রীরা।
শ্যামলী পরিবহনের কর্ণধর অবনী কুমার ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন পর সড়ক পথে বাংলাদেশে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। করোনার কারণে ২০২০ সালের ১২ মার্চ এই সার্ভিসটি বন্ধ হয়ে যায়। খুলনাবাসী এবং সাংবাদিকদের অনুপ্রেরণায় সার্ভিসটি আবার চালু করেছি। খুলনার সাংবাদিক এবং সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক কলকাতা গিয়েছিলেন। সেই সময়ে এই সার্ভিসটি চালুর আশ্বাস দিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিষের দাম বেড়ে গেছে। মানুষের আয় কমে গেছে। নূন্যতম ভাড়ায় খুলনার মানুষ যেন কলকাতায় যেতে পারে সেদিকে তিনি দৃষ্টি রাখবেন। সবেমাত্র সার্ভিসটি চালু হয়েছে। সামনে ঈদের উৎসব ও পুজোয় যাত্রীদের সংখ্যা বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরে সার্ভিসটি চালু করেছি। মানুষের স্বতস্ফুর্তভাবে যাত্রা করছেন। এদিন সর্বমোট ২৮ জন যাত্রী নিয়ে বেনাপোল বন্দর হয়ে খুলনা এসেছি। এখন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবো। পরবর্তীতে প্রতিদিন কলকাতা থেকে বেনাপোল হয়ে বাংলাদেশে তিনটি গাড়ি রান করবে। হয়তো সবগুলো খুলনা হয়ে যেতে পারবে না। তবে খুলনা-কলকাতা সরাসরি একটি বাস সার্ভিস চালু করা হবে।
ঢাকা, খুলনা ও কোলকাতা রুটের বাস সার্ভিস চালুর বিষয়ে খুলনা প্রেসক্লাবে সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, এটা খুলনাবাসির জন্য একটি আনন্দঘন মুহুর্ত। শ্যামলী পরিবহনের মাধ্যমে খুলনা থেকে অল্প সময়ের মধ্যে কলকাতায় পৌছানো সম্ভাব হবে। তিনি ভারত বাংলাদেশে গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। যেন মানুষ এ পরিবহনের স্বর্তস্ফুর্তভাবে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। এক্ষেত্রে খুলনার মানুষের সকল ধরণের সহযোগীতা থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশে আসার অনুভুতি জানিয়ে কলকাতার বাসিন্দা সীমা দাস বলেন, এটাই তার প্রথম বাংলাদেশে আসা। এখানে এসে তার ভাল লাগছে। দু’বছর তিন মাস পরে শ্যামলী পরিবহন নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক দেশের সাথে মেল বন্ধন হয় বাস ট্রেন বা বিমানের মাধ্যমে। তার মধ্যে কোন একটি যানবহন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলে দু’দেশের পক্ষে অনেক অসুবিধা হয়ে যায়। এটা দু’দেশের জন্য অনেক আনন্দের বিষয়।
অপর যাত্রী অনিন্দ চৌধুরী বলেন, কলকাতা ইয়রপোর্ট ১ নম্বর থেকে উঠেছেন। করোনার পর বাসটি আমাদের প্রথম সার্ভিস দিচ্ছে। বাসের সার্ভিসে তিনি খুব খুশি। কলকতা হয়ে খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য ১ হাজার ৪০০ রুপি ভাড়া নিয়েছে।
রাজেন্দ্র কর্মকার বারাসাত থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, বাসের সার্ভিসটি ভাল লেগেছে তার। বর্ডারে কোন সমস্যা হয়নি এরা সবকিছু করে দিয়েছে। এ পর্যন্ত আসতে কোন সমস্যা হয়নি।
কলকাতার ফ্যাশন ডিজাইনার ইরাণী মিত্র বলেন, ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে এসেছি। বাস সার্ভিসটি ছিল না। দুই বছর বন্ধ থাকার পর সার্ভিসটি চালু হয়েছে। বন্ধের পর প্রথম যাত্রী এবং এ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যেতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। একইসঙ্গে পদ্মা সেতু দিয়ে প্রথম যাত্রা করবো। এটি একটি উপরি পাওনা। এটিও একটি এ্যাওয়ার্ড আমার কাছে। বাস কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো। তাদের সার্ভিস ও ব্যবহারে আমি আপ্লুত।