খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার বন্ধ থাকবে
  যশোরে গরমে অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
  বান্দরবানের রুমা থানচি সীমান্তবর্তী এলাকায় দু’টি মরদেহ উদ্ধার
  দেশে আবারও ৭২ ঘন্টার হিট অ্যালার্ট জারি : আবহাওয়া অধিদপ্তর
  দুই আইনজীবির আদালত অবমাননার শুনানি পিছিয়ে ৩০ জুন : আপিল বিভাগ

দিঘলিয়ায় নিলামের বাইরে অতিরিক্ত সরকারি গাছ কর্তন, তদন্তে কমিটি

একরামুল হোসেন লিপু

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের মাঝিরগাতি হতে সোনাকুড় সড়কের পাশে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিলামের বাইরে অতিরিক্ত সরকারি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে। গত ২ দিনে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকায় বেশ আলোচিত হচ্ছে। ঘটনা তদন্তে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত গাছ কর্তনের সত্যতা পেয়েছে বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়। ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

জানা যায়, গত ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গাজীরহাট ইউনিয়নের মাঝিরগাতী থেকে সোনাকুড় সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত মরা, শুকনা, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু গাছসমূহ (যেখানে যে অবস্থায় আছে) প্রকাশ্যে নিলাম হয়। যার স্বারক নং ৩১৬ তাং ০৩/০৪/২০২২ ইং। একই দিন নিলাম মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এস এম হাবিবুর রহমান তারেক নামে জনৈক ব্যক্তিকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। তারেক দিঘলিয়া উপজেলা যুবলীগের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং একই সাথে তিনি দিঘলিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নিলাম মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁকে ২ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করা হয় এবং ৫ এপ্রিল থেকে ৫ মে/২২ মধ্যে ৩৩৭ টি শিশু গাছ কর্তনের আদেশ প্রদান করেন। সে মোতাবেক তিনি উল্লেখিত নিলামের টাকা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রদান করেন।

অভিযোগ উঠেছে, উক্ত ঠিকাদার নির্ধারিত মরা, শুকনা, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু গাছ কর্তনের পাশাপাশি নিলামের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যবান গাছ কর্তন শুরু করেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর গোচরীভূত হলে তাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১২ মে) উপজেলা বন কর্মকর্তাসহ সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা দিনভর অনুসন্ধান করে অতিরিক্ত মূল্যবান সরকারি গাছ কর্তনের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

উপজেলা বন কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল বাশার খুলনা গেজেটকে বলেন, আমরা নিলামের গাছগুলি সংখ্যার মাধ্যমে চিহ্নিত করে দিয়েছিলাম। এর বাইরে অতিরিক্ত ২০ টি গাছ কর্তনের প্রমাণ পেয়েছি।

নিলামের বাইরে অতিরিক্ত গাছ কর্তনের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম খুলনা গেজেট কে বলেন, সরকারি নিয়ম কানুন মেনে আমরা উল্লেখিত সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত মরা, শুকনো, ঝুঁকিপূর্ণ শিশু গাছ সমূহ কর্তনের প্রকাশ্য নিলামে ডাকের ব্যবস্থা করি। বিভিন্ন লোক মারফত জানতে পারি নিলামের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যবান সরকারি গাছ কর্তন করা হচ্ছে। বিষয়টি জানার পর সরকারী বিধি মোতাবেক সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

নিলামের বাইরে অতিরিক্ত গাছ কর্তনের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, অতিরিক্ত গাছ কর্তনের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন মাধ্যমে জরিপ করে দেখা যায় যে, অতিরিক্ত গাছ কর্তন করা হয়েছে। এ অভিযোগে ইতিপূর্বে আমরা দুই বার বাঁধা দিয়েছি। নিলামের বাইরে অন্য গাছ কাটলে তার দায়ভার ঠিকাদারকে নিতে হবে। আমরা সরকারের স্বার্থ রক্ষা করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও জানান, অধিকতর তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আলিমুজ্জামান মিলনকে আহবায়ক, উপজেলা প্রকৌশলী আবু তারেক সাইফুল কামাল ও উপজেলা বন কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল বাশারকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁদের সুস্পষ্ট মতামত প্রদান করতে বলা হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!