খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বিএনপি। দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় মেয়র পদে বিএনপির কেউ প্রার্থী হচ্ছেন না। দলের এমন শক্ত অবস্থানের মধ্যেও বিএনপি সমর্থিত বর্তমান ও সাবেক ৫ কাউন্সিলররা ভোটের মাঠে তৎপর রয়েছেন।
অন্যদিকে নগরীর পাঁচটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জামায়াত নেতারা। তাঁদের প্রার্থীরা এরই মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচনী কার্যক্রমও চালাচ্ছেন জোরেশোরে।
আগামী ১২ জুন দ্বিতীয় ধাপে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ১৬ মে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডে দৌলতপুর থানা জামায়াতের নায়েবে আমির আজিজুর রহমান স্বপন, ১২ নম্বরে মহানগর জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির মাস্টার শফিকুল আলম, ১৮ নম্বরে ওয়ার্ড আমির মশিউর রহমান রমজান, ১৯ নম্বরে সোনাডাঙ্গা থানা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম পান্না এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল প্রার্থী হচ্ছেন। এর মধ্যে মশিউর রহমান রমজান বাদে অন্য চারজন ২০১৩ ও ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল ২০১৩ সালে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। আর ২০০৮ সালের নির্বাচনে নগরীর ৪ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জামায়াতের দুই নেতা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
এছাড়া ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান মনি, কেসিসির ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপির আহ্বায়ক আশফাকুর রহমান কাকন, নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ২২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুব কায়সার, ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শমসের আলী মিন্টু এবং সংরিক্ষত ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাজেদা খাতুন নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। অনেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
কাউন্সিলর প্রার্থীরা জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্তের চাইতে বড় প্রতিবন্ধকতা ভোটের পরিবেশ। কাউন্সিলর নির্বাচনে দলের প্রভাব কম থাকে। অতীতে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও বিজয়ী হয়েছেন অনেকে। এজন্য ভোট সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের ঝুঁকি নিতে চান তাদের তারা। কিন্তু ভোটের পরিবেশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সবাই।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে যাবে না। দলের কোনো নেতা প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘অতীতে অনেকবার প্রমাণ হয়েছে, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জামায়াত কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।’ তিনি বলেন, ‘অনেক নেতা এবং তাঁদের পরিবার নিজ এলাকায় জনপ্রিয়। এর আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকে অংশ নিয়েছেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় এবারও কেউ কেউ প্রার্থী হয়েছেন। এটি তাঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
খুলনা গেজেট/হিমালয়