তীব্র রোদের আগুনে পুড়ছে যশোর। প্রচন্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। এ কারণে যশোরের বিভিন্ন হাসপাতালে গরমজনিত রোগীর ভিড় বাড়ছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে নির্দিষ্ট শয্যার বাইরেও রোগীরা মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
যশোর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে গোটা যশোরাঞ্চল তীব্র রোদের আগুনে পুড়ছে। রোববার যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার দুপুর ৩টায় যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৪০ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী তিনদিন ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এ তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। এ রোদ ও গরমে বিপর্যস্ত যশোরের জনজীবন। কোথাও স্বস্তি মিলছে না। দুপুর থেকেই গোটা শহর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। মানুষ প্রয়েজনীয় কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। এর মধ্যে কাহিল হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে তাদের কাজ করতে হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, রোববার রাত পর্যন্ত হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৭ জন। এখানে বেডের সংখ্যা ৩২টি। সকাল আটটা থেকে থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ছাড়পত্র নিয়েছেন ১১ জন।
এদিকে, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড ঘুরে একই চিত্র পাওয়া যায়। এ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩১ জন। এখানে বেডের সংখ্যা ১৭টি। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন সাতজন, ছাড়পত্র নিয়েছেন নয়জন। এসব রোগীর বেশিরভাগ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।
ওয়ার্ডের সেবিকারা জানান, বেশিরভাগ রোগী শ্বাসকষ্ট, জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। বেডের তুলনায় রোগী বেশি হওয়ায় বারান্দায় বিছানা পেতে দিতে হয়েছে। রোগীদের শোয়ার মতো মেট্রেস পর্যাপ্ত নেই।
শহরের ঘোপ বেলতলা এলাকার সুরুজ আলী জানান, শনিবার রাত আটটার দিকে তার মা হামিদা বেগমকে (৬০) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কিন্তু রোববার পর্যন্ত কোনো বেড পাননি। গরমে মেঝেতে থেকে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ওয়ার্ডের ফ্যানগুলো ঘুরলেও তাতে তেমন বাতাস হয় না।
পারখাজুরা থেকে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সবদুল মিয়া (৫০)। তিনি বলেন, প্রচন্ড জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি ফ্যান থাকলেও তাতে বাতাস হচ্ছে না। ওয়ার্ডে রোগীদের গাদাগাদি। অসুখ ভালো হওয়ার থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, প্রচন্ড গরমে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে, ডায়রিয়া, অ্যাজমা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। রোগীর একটু চাপ বেড়েছে সত্য। তবে, হাসপাতালে ওষুধ ও স্যালাইন পর্যাপ্ত মজুত আছে। গরমে সুস্থ থাকতে বেশি পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ দেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই