খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ | ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম তদন্তে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৬৫
  গাজীপুরের শ্রীপুরে বোতাম তৈরির কারখানায় আগুনে নিহত ১

তিন মাস পূর্বে ভেঙে পড়া সেতু সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেই

মোঃ আলমগীর হোসেন, লোহাগড়া

নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে প্রায় তিন মাস ধরে। নির্মাণের জন্যও নেই কোনো উদ্যোগ। অবহেলার চরম এক সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটি। নির্মাণের এক যুগেও সেতুটির জন্য নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। তাই এতদিন হেঁটেই সেই পথ পার করে আসছিল পৌর বাসিন্দারা।

সর্বশেষ ভেঙে পড়ার পর জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনায় পৌরবাসীর এক যুগের আক্ষেপ হয়ে গেল দ্বিগুণ। পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যস্থলে যেতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী এবং হাট-বাজারের যাতায়াতকারীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়াও তাদের ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময়। নবগঙ্গা নদীর উত্তরে চোরখালী, জয়পুর আর ছাতড়া গ্রাম নিয়ে গঠিত ১ নং ওয়ার্ড। নদীর দক্ষিণে কচুবাড়ীয়া, রামপুর, শিংগা আর মশাঘুনি নিয়ে গঠিত পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড। পৌরসভার পশ্চিম এলাকার জনগণের যাতায়াত নিরবচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে উত্তরের ঢোরখালী আর দক্ষিণের কচুবাড়ীয়া গ্রামের সোজাসুজি একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে লোহাগড়া পৌর কর্তৃপক্ষ। তাতে করে পৌরবাসীর স্বল্প দূরত্বে পৌরকার্যালয়, উপজেলা সদর ও জেলা শহরে যাতায়াত নিশ্চিত হয়।

ইতোমধ্যে ক্ষমতার পালাবদল হলেও সেতুটি নির্মাণের এক যুগ পরেও নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়ক। হেঁটেই নদীর এপার-ওপার যাতায়াত করে আসছিল সাধারণ মানুষ। কিন্তু চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে বালুব্যবসায়ীরা ড্রেজার পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আনার ব্যবস্থা করতে গিয়ে অতিপ্রয়োজনীয় সেতুটি মাঝ বরাবর ভেঙে ফেলে রাতের অন্ধকারে। তারপর থেকেই চরম দুর্ভোগে পড়ে যায় সেতু ব্যবহারকারীরা। এক যুগেও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক এক মিনিটের পথ এখন লাগছে এক ঘন্টা পৌরবাসীর আক্ষেপ, তাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি দেখতেও আসেনি পৌর কর্তৃপক্ষ, এমন ভাষা তাদের।

কচুবাড়িয়া গ্রামের কাজী কবির হোসেন বলেন, ব্রিজটা ভেঙে যাওয়ার পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে শহরের যেতে হয়। এতে আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি তেমনি সময়ও নষ্ট হচ্ছে। ব্রিজটা দ্রুত মোরামত করে দিলে সময় বাঁচবে এবং আর্থিক ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাব।

ধোপাদাহ গ্রামের জাহিদুল হক কে বলেন, আমাদের ছেলেমেয়ে ওপারে মাদ্রাসায় পড়ে। তারা এখন ঠিকমতো যেতে পারছে না। এ ছাড়া নড়াইল সদর হাসপাতালে ও কোর্টে ঠিকমতো যেতে পারছি না। এক মিনিটের পথ এখন ঘুরে যেতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। তারপর আবার সময়মতো এখানথেকে গাড়ি পাওয়া যায় না। ব্রিজটা আমাদের খুবই জরুরি।

লোহাগড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর বিশ্বনাথ দাস ভুন্ডুল বলেন,নবগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত কাঠের সেতুটি প্রায় ৩ মাস আগে ড্রেজারের ধাক্কায় ভেঙে গেছে জনগনের পারাপারে সমেস্যা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন আমি ও পৌর মেয়র সেতুটি পরির্দশন করেছি, এ সেতুটি মেরামতের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, জেলার ‘সি’ শ্রেণির এই পৌরসভার চার ভাগের একভাগ মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য সেতুটি যেন মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা হয় এবং তার মাধ্যমে শিশুদের স্কুলে যাতায়াত ও সাধারণের অফিস-আদালত,হাটবাজারসহ মূল সড়কে সংক্ষিপ্ত যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়ে মূল সড়কে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়।

এই বিষয়ে লোহাগড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ুর রহমান বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা তিনি জেনেছেন। তবে ক্ষতিপূরণ বা ড্রেজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারেননি তিনি।

তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে সেতু মেরামতের কথা ভাবছি না, সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী কংক্রিটের ব্রিজের নির্মাণের কথা ভাবছি। এ সময় সাধারণ মানুষকে নৌকার ব্যবস্থা করতে পরামর্শ দেন তিনি।

খুলনা গেজেট/ টি আই




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!