সাতক্ষীরায় আলোচিত লুৎফার নিকারী হত্যা মামলার প্রধান আসামী তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, আ’লীগ নেতা সরদার মশিয়ার রহমানের মানবিক বিবেচনায় দেওয়া জামিন বাতিল করেছেন আদালত। রবিবার (১১ অক্টোবর) সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান শুনানী শেষে আসামীর জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
সরদার মশিয়ার রহমান (৩৫) সাতক্ষীরার তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি তালা সদরের বারুইহাটি গ্রামের মৃত. নুর আলী সরদারের ছেলে।
সাতক্ষীরা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল মজিদ বলেন,আসামী সরদার মশিয়ার রহমান জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে মানবিক বিবেচনায় অন্তবর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর মায়ের অসুস্থতায় মানবিক বিবেচনায় ১০ দিন, ১৬ সেপ্টেম্বর মায়ের কুলখানির জন্য ১০ দিন এবং ২৭ সেপ্টেম্বর মানবিক বিবেচনায় আরও ১৫ দিন অন্তুবর্তীকালীন জামিন দেন জেলা ও দায়রা জজ।
১১ অক্টোবর হত্যা মামলাটির আসামী পক্ষের প্রধান আসামীর জামিন আবেদন ও বাদী পক্ষের জামিন বাতিলের আবেদনের উপর শুনানীর দিন ধার্য্য ছিল। শুনানীতে আসামী পক্ষ স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন আর বাদী পক্ষ জামিন বাতিলে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে অন্তবর্তীকালীন জামিন বাতিল করে আসামীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান।
সাতক্ষীরা কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল ঘোষ জানান, আসামী সরদার মশিয়ার রহমানকে বিকালে আদালত থেকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ আগষ্ট রাত ১১টার দিকে তালা উপজেলার নলবুনিয়া বিলের সরকারি খালে মাছ ধরার সময় সরদার মশিয়ার রহমানের মাছের ঘেরে মাছ চুরির অভিযোগে লুৎফর নিকারীর ছেলে সেলিম নিকারীকে বেধড়ক মারপিট করে মশিয়ার রহমান ও তার লোকজন। ছেলেকে মারপিটের খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সেলিম নিকারীর বাবা লুৎফর নিকারী। এসময় মশিয়ার রহমান তাকে বুকে লাখি মেরে খালে ফেলে দেন। এরপর গ্রামবাসীরা লুৎফর নিকারীকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।
এঘটনায় নিহতের ছেলে সেলিম নিকারী বাদী হয়ে মশিয়ার রহমানকে প্রধান আসামী করে তালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সরদার মশিয়ার রহমানকে গ্রেপ্তার করে। ওই দিন রাতেই তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
খুলনা গেজেট/কেএম