খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩ মে, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, স্টেশন মস্টারসহ সাময়িক বরখাস্ত ৩
  এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়

তালায় ইভটিজিংয়ের শিকার স্কুলছাত্রীর পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার তালার ঘোষনগর গ্রামে এক সন্তানের জনক সুমন মাতব্বরের ইভটিজিং এর শিকার হয়ে স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির এক ছাত্রীর শিক্ষা গ্রহণ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও এখনও কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগি ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবার। ফলে বখাটে ইভটিজার সুমন মাতব্বরের নানান আস্ফালন, কুৎসা রটানো ও হুমকী ধামকির কারণে গত এক মাস ধরে স্কুলে না যেয়ে মামার বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে ওই স্কুল ছাত্রী। এঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির এক ছাত্রীর চলার পথে প্রতিনিয়ত উত্যাক্ত করতে থাকে তালার ঘোষনগর গ্রামে এক সন্তানের জনক সুমন মাতব্বর। বখাটের সুমনের একের পর এক ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করতে যেয়ে এখন উল্টো বিপাকে পড়েছে স্কুল ছাত্রীর পরিবার। স্থানীয় প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে প্রতিনিয়ত উত্যাক্ত করে ওই শিক্ষার্থীর জীবন অতিষ্ট করে তুলছে স’মিলের শ্রমিক ইভটিজার সমুন।

এঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরসহ থানা পুলিশের সহযোগীতা চাইলেও প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা যথাযথ ভূমিকা না রাখার কারণে বখাটে সুমন মাতব্বর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সহ এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

ইভটিজিং এর শিকার ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের মেয়ে (১৫) স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। স্কুলে যাতায়াতের পথে গঙ্গারামপুরের বাজারের শামীমের স’ মিলের শ্রমিক সুমন মাতব্বর প্রতিনিয়ত ওই ছাত্রীকে উত্যাক্ত করে। এবিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রীর পরিবার ঘটনার প্রতিবাদ করলে সুমনসহ তার স’মিল মালিক উল্টো ওই ছাত্রীর পিতা-মাতাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি প্রদান করে। সুমন মাতব্বর গত প্রায় দু’ বছর ধরে গঙ্গারামপুর বাজারের শামীমের স’মিলে শ্রমিকের কাজ করে আসছে। তার স্ত্রী ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সে ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা। স’মিল মালিক শামীম এর কারণে স্থানীয়রা সুমনকে কিছু বলতে সাহস পায়না।

এদিকে স’মিল শ্রমিক সুমন মাতব্বরের উত্ত্যাক্ত করার প্রতিবাদে ওই ছাত্রীর মা ২৫ সেপ্টেম্বর তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সে সময়ে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তালা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। থানার পুলিশ এবিষয়ে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে শালিসে বসেন। শালিস সভায় উত্ত্যাক্ত করার বিষয় প্রমানিত হয়। এসময় থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার সুযোগে সুমন মাতব্বর ও স’মিল মালিক শামীম সালিস থেকে কৌশলে ১৫দিন সময় নিয়ে চলে যান। এঘটনার এক মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসন অদ্যবদী তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

বখাটে সুমন মাতব্বরের নানান আস্ফালন, কুৎসা রটানো ও হুমকীর কারণে আমাদের মেয়ে গত এক মাস ধরে স্কুলে না যেয়ে মামার বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে। যে কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তালা থানাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ওই ছাত্রীর পরিবার উত্ত্যাক্তকারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে পারেন।

তালা থানা এস আই সৈকত জানান, ঘটনাটি নিয়ে খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতে থানায় বসাবসি হয়। যদিও বিষয়টি শালিস যোগ্য না। তারপরেও সুমনকে একটা সুযোগ দেয়া হয়েছিল। এখন যদি সে শালিসের শর্তমত কাজ না করে, তাহলে এঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। তিনি ভুক্তভোগি স্কুল ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের থানায় যোগযোগ করতে বলেন।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!