খুলনায় কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। বেড়েছে পশু আমদানি সংখ্যা ও হাসিল আদায়ের পরিমাণ। তবে দাম বেশী থাকায় অনেক ক্রেতাকেই খালি হাতে ফিরতে দেখা গেছে আজ।
গত ৩ জুলাই জোড়াগেটে পশুর হাট উদ্বোধন করা হয়। প্রথম তিনদিন বিক্রি তেমন না হলেও আজ বেড়েছে বিক্রির পরিমাণ। বুধবার রাত ১২ টার পর থেকে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০ টা পর্যন্ত ৩৩৩ টি পশু বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ২১৮ টি গরু ও ১১৫ টি ছাগল বিক্রি হয়েছে। পশুর হাট থেকে হাসিল আদায় হয়েছে ৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ টাকা।
নগরীর চানমারী বাজার আহমদীয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ফারুখ আহমদ বলেন, আছরের নামাজ পড়ে গরু কিনতে হাটে এসেছি। দর দাম না হওয়ায় অনেক্ষণ ঘুরেছি। অবশেষে একটি গরুর দেখা মিললেও মালিক ৬৫ হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু অনেক কষাকষির পর ৫২ হাজার টাকায় গরুটি আমাকে দিয়েছেন। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে প্রতিবছর গরু আসে। কিন্তু এবার এখনও পর্যন্ত না আসায় গরুর দাম একটু বেশী। পরিস্থিতির কারণে ছোট একটা গরু এতো দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার দু’বন্ধু মো: হাফিজুর রহমান ও মো: জাহাঙ্গীর গরু কিনতে হাটে এসেছেন । তিন ঘন্টা ঘুরেও নিজেদের বাজেটের মধ্যে গরু কিনতে পারেননি। দাম বেশী চাচ্ছেন খামারীরা। তিনি বলেন, গরুর মালিক আজ হাটের ভাব বুঝে আগামীকাল থেকে গরু দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করবেন।
কথা হয় মোংলা পোর্টের হিসাব রক্ষক তৌহিদের সাথে। বিকেল থেকে গরু কিনবেন বলে হাটে ঘুরছেন। কিন্তু ব্যাটে বলে মেলাতে পারেননি। তাই রাগ হয়ে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। আগামীকাল হাটে এসে ভাব বুঝে গরু কিনবেন। গরুর প্রকৃত মালিকদের কাছ থেকে কম দামে কিনে দালালরা এখানে বেশী দরে বিক্রি করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। দালালদের হাতে ব্যবসা চলে যাওয়ায় পশুর দাম আকশচুম্বী হয়েছে।
কথা হয় গরুর ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার সাথে। তিনি আজ সকালে ট্রলারে ২৪ টি গরু খুলনার জোড়াগেট পশুর হাটে এনেছেন। সকাল থেকে এ পর্যন্ত তার ৩ টি গরু বিক্রি হয়েছে। পশুর দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। বেড়েছে গো খাদ্যের দাম। পরিবহন খরচও তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। তাই বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।
জোড়াগেট পশুর হাটের আহবায়ক ও ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন বলেন, গত দু’দিনের তুলনায় এখানে পশুর আমদানি বেশী হয়েছে। শুক্রবার হাট আরও জমে উঠবে। দাম গেল বারের তুলনায় বেশী। কারণ হিসেবে তিনি জানান, সব জিনিষের দাম বেড়েছে। তারপরও পশু বিক্রির সংখ্যা কম নয়। গত দু’দিনের তুলনায় আজ বিক্রি বেড়েছে। বেড়েছে হাসিল আদায়ের পরিমাণও। হাট ঈদের দিন সকাল ৮ টা পর্যন্ত চলবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই