খুলনাস্থ দৈনিক জন্মভূমি সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালুকে চরমপন্থী দল জনযুদ্ধের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, কমিউনিষ্ট আন্দোলনের সংগঠক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার চাওয়ায় তিনি খুন হন। এ হত্যাকান্ড অত্যান্ত পরিকল্পিত। নিহত সম্পাদক আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। খুন হন ২৭ জুন ২০০৪ সালে।
জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইবুনালের জজ সাইফুজ্জামান হিরো ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারী এ মামলার বিস্ফোরক অংশের রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি উল্লেখ করেন জনযুদ্ধই এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। মামলায় ৫৮ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৮ জন সাক্ষ্য দেন। তার আত্বীয় স্বজনরা স্বাক্ষী দেননি। বিস্ফোরক অংশের রায়ে জাহিদ গাজী, খোঁড়া নজরুল, স্বাধীন, মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর (পলাতক) ও সাদিকুর রহমান রিপনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়। মামলার রায়ের পূর্বেই তথাকথিত মার্কসবাদী নেতা, জনযুদ্ধের প্রধান আঃ রশিদ মালিথা ওরফে তপন ক্রসফায়ারে নিহত হয়। হত্যা মামলা অংশে রায়ে ৬ জন আসামি বেকসুর খালাস পায়।
স্বাধীনতার পূর্বে নিহত সম্পাদক বালু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তার রাজনৈতিক জীবনের বড় অর্জন ৭১ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ দিবসে স্থানীয় হাদিস পার্কে ছাত্রলীগের পতাকা উত্তোলন এবং ৬৯-র ফেব্রুয়ারিতে শহীদ হাদিসের নাম অনুসারে স্থানীয় পার্কের নামকরণের প্রধান প্রবক্তা। ৬৯-র অগ্নিঝরা দিনে ছাত্রলীগের শহর শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, খুলনার যুগ্ন আহবায়ক।
সাংবাদিকতার জীবনে বড় অর্জন প্রেস ক্লাব পুর্নগঠনে ১৯৮৩-৮৪ সালে প্রথম সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৪-৮৫, ১৯৯৮-৯৯, ২০০৩-২০০৪ সালে প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে মরনোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সাংবাদিকদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসক্লাব ও দৈনিক জন্মভূমি পরিবার পৃথক পৃথক কর্মসূচি নিয়েছে।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ