খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এপিএ’র আওতায় আবশ্যকীয় কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে অংশীজনের (স্টেকহোল্ডার) অংশগ্রহণে তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার (০৫ মার্চ) বেলা ১১টায় উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক, দক্ষ জনশক্তির। আর এই দেশপ্রেমিক, দক্ষ জনশক্তি তৈরির দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয় তার দায়িত্ব পালন করলে এই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্বচ্ছ-জবাবদিহিমূলক এবং সুশাসন নিশ্চিতকারী মানসম্মত প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখতে চাই। আমি মনে আমাদের খুলনার সিভিল সোসাইটিও এ প্রত্যাশা করেন। মূলত: জনপ্রত্যাশা পূরণে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্যেই আমাদের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছি এবং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নে চেষ্টা করছি।
উপাচার্য বলেন, শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে কোয়ালিটি এডুকেশন প্রয়োজন। বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের গাইডলাইন অনুসরণ করে আমরা ইতোমধ্যে ৪৫টি ক্রাইটেরিয়া অর্জন করতে পেরেছি। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হবে এমন- যেখানে জ্ঞান এবং প্রযুক্তির উদ্ভাবন হবে। এজন্য প্রয়োজন গবেষণা বৃদ্ধি। আমরা আমাদের গ্রাজুয়েটদের সেভাবেই তৈরি করতে সচেষ্ট। গবেষণায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। যার প্রমাণ- এবছর সর্বোচ্চ সংখ্যক পিএইচডি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের সংখ্যাও অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে। নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম এবং জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণের পথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েও স্মার্ট ক্লাসরুম চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু ডিসিপ্লিনে স্মার্ট ক্লাসরুম চালু হয়েছে। সব ডিসিপ্লিনে পর্যায়ক্রমে স্মার্ট ক্লাসরুম চালু সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগিয়ে চলার পথে অতীতের ন্যায় সকল মহলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। সভা সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিএ টিম লিডার ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-গর্ভন্যান্স কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির ফোকালপয়েন্ট, আইসিটি সেলের পরিচালক কাজী মাসুদুল আলম তথ্য অধিকার বিষয়ে বিভিন্ন দিক পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির ফোকালপয়েন্ট জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান, শুদ্ধাচার কৌশল কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন এপিএর ফোকালপয়েন্ট উপ-রেজিস্ট্রার (কাউন্সিল) এস এম আবু নাসের ফারুক অভিযোগ প্রতিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির ফোকালপয়েন্ট উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) দীপক চন্দ্র মন্ডল এবং সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতির বিভিন্ন বিষয় পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির ফোকাল পয়েন্ট উপ-রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন-৪) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সভায় মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. কামরুল হাসান তালুকদার, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের নবনিযুক্ত ডিন প্রফেসর ড. মো. আব্দূল্লাহ আবুসাঈদ খান, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহমেদ, খুলনা জজকোর্টের ডিভিশনার স্পেশাল পিপি এ্যাড. মাহমুদা ফারজানা সেতু, এপিপি এ্যাড. আফরোজা রোজী, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, অসীম আনন্দ দাস।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, এপিএ’র বিভিন্ন কমিটির কমিটির ফোকালপয়েন্ট ও সদস্য, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড