যশোরের চৌগাছায় আবারও এক কৃষকের মাঠে চাষ করা প্রায় ৮শ’ পেয়ারা ও কুলগাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের মাঠে এই ঘটনা ঘটেছে। একসাথে এত বড় ক্ষতিতে দিশেহারা ওই কৃষক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক মামলার প্রস্তুুত নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। কিছুদিন আগে হাজরাখানা, সাদিপুর, ধুলিয়ানীসহ উপজেলার বেশ কিছু এলাকার কৃষকের ফসল কেটে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। থেমে থেমে ফসল কাটার ঘটনায় উদ্বগ্ন চাষিরা।
উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য কৃষক মনিরুল ইসলাম মনিরের দেড় বিঘা জমির প্রায় ৮শ কুল ও পেয়ারা গাছ কেটে দিয়েছে। পটলের ক্ষেতের মধ্যে সারিবদ্ধভাবে লাগানো সমুদয় গাছের গোড়া থেকেই কেটে ফেলা হয়েছে। সোমবার সকালে কৃষক মনিরুল ইসলাম জমিতে যেয়ে এই দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মুহুর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের নারী পুরুষ ওই মাঠে হাজির হয়ে এই ঘটনার ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
কৃষক মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, দেড় বিঘা জমিতে পটল চাষ করেছি। আর কিছুদিন পরেই পটল গাছ মারা যাবে। তাই বেশ আগে ভাগেই সমুদয় জমিতে প্রায় ৮শ’ কুল ও পেয়ারা গাছ লাগানো হয়। সময় মত পরিচর্যার কারণে অধিকাংশ পেয়ারা গাছে ফুল আসতে শুরু করেছে। এই ফসল নিয়ে আকাশসম স্বপ্ন ছিল আমার কিন্তু এক রাতেই সব শেষ করে দিয়েছে। তিনি এ ঘটনার জন্য একই গ্রামের বহুল আলোচিত ব্যক্তি ইকবাল হোসেনকে দায়ি করেন। ইকবাল ও তার সহযোগীদের নামে থানায় মামলা করবেন বলেও তিনি জানান।
ভুক্তভোগী চাষি মনিরুল ইসলাম, গ্রামবাসি আব্দুস সালাম, লিটন হোসেন, সাগর হোসেন, বিল্লাল হোসেন, সামুদ রানাসহ একাধিক কৃষক বলেন, রায়নগর মাঠে পাশ্ববর্তী জগদীশপুর গ্রামের মিয়াদের ৮ বিঘা জমি আছে। এতোদিন ওই জমি ইকবাল হোসেন লিজ নিয়ে চাষাবাদ করতো। সময়মত জমির লিজের টাকা মালিককে পরিশোধ না করায় জমি মালিক সমুদয় জমি কৃষক মনিরুল ইসলাম মনিরের দায়িত্বে দেন। এঘটনায় তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে ইকবাল হোসেন। তিনি একাধিকবার মনিরকে জমির দায়িত্ব না নেয়ার জন্য হুমকি দেয়। তাদের ধারণা জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ইকবাল হোসেন রাতের আঁধারে জমির সমুদয় গাছ কেটে সাবাড় করেছে।
এ বিষয়ে ইকবাল হোসেন বলেন, জমি নিয়ে মনিরের সাথে বিরোধ আছে ঠিকই কিন্তু এই কাজ আমি করেনি। তাকে ফাঁসানোর জন্য রায়নগর গ্রামের কিছু ব্যক্তি ও যশোরের জৈনক মিঠু নামের এক ব্যক্তি এই কাজ করেছে। আমি চেষ্টা করছি, খুব দ্রæতই সকলের সামনে সত্যটি তুলে ধরব।