যশোর চৌগাছায় পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংসহ নানা কর্মকান্ডে গ্রাহক অসেন্তাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলাবাসী বিদ্যুতের এমন সেবায় চরম হতাশ। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই, তবে বিদ্যুৎ পরিবেশনে অনেক সময় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
চৌগাছাকে শতভাগ বিদ্যুতের উপজেলা ঘোষণা করা হয়েছে বেশ আগেই। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এমনকি ফাঁকা মাঠের ভেতরে একটি ঘর সেখানেও পৌঁছে গেছে কারেন্টের আলো। কিন্তু এই আলো মানুষ দিন রাতে কতটুকু ভোগ করতে পারছেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। স্বাভাবিক সময়ে রাত দিনে ২৪ ঘন্টায় কম করে হলেও ৩/৪ ঘন্টা চলে লোডশেডিং। আর অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তো চলে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং অভিযোগ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের।লোডশেডিং ছাড়াও বিদ্যুৎ বিল, সংযোগ স্থাপন, মিটার পরিবর্তন, কাটা ছেড়া তার মেরামতসহ নানা কাজের বিষয়েও গ্রাহক অসন্তোষ চরমে উঠেছে।
উপজেলার খড়িঞ্চা গ্রামের এক শিক্ষক বলেন, তার বাসাতে নেই কোনো ফ্রিজ, নেই এসি, স্বামী স্ত্রী ও এক সন্তানসহ তিন সদস্যের পরিবার তার। স্বামী স্ত্রী চাকরির সুবাদে ভোরে বাসা ত্যাগ করেন আর সন্তানটি চলে যায় তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রতি মাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা। সম্প্রতি হঠাৎ করেই এক মাসে তার বিল এসেছে ৪১শ টাকা। বিল থেকে শিক্ষক দম্পতি হতবাক, পরের দিন স্কুল ছুটি নিয়ে প্রথমে ছুটে যান পুড়াপাড়া বিদ্যুতের সাব কেন্দ্রে কোনো সুরাহ নেই, চলে আসেন চৌগাছা জোনাল অফিসে। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন, কিন্তু সমাধান হয়নি। তাকে পুরো টাকা গুনতে হয়েছে পরে মিটার পরিবর্তন করে আর একটি মিটার তারা লাগিয়ে দিয়েছে।
গত ১৯ আগস্ট চৌগাছা বাজারের একটি অংশ নিয়ে থানাপাড়া মহল্লা জুড়ে সকাল ৮ টায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুতের জন্য প্রহর গুনতে গুনতে কয়েক ঘন্টা পার হয় কিন্তু আসে না বিদ্যুৎ। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে স্থানীয়রা জানতে পারেন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংযোগ বন্ধ আছে, বিকেল ৪ টায় বিদ্যুৎ আসবে।
কর্তৃপক্ষ কোনো পূর্ব ঘোষণা না দিয়েই বিদ্যুৎ বন্ধ করেন অভিযোগ স্থানীয়দের। বিকেল ৪ টায় বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা থাকলেও গ্রাহকরা সেই বিদ্যুৎ পান বিকেল ৬ টা ১৮ মিনিটে। ওই দিন রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে পুনরায় চলে যায় বিদ্যুৎ গোটা উপজেলাজুড়ে বিদ্যুতের এমন কর্ম এখন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে, ফলে বাড়ছে গ্রাহক অসন্তোষ।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, অতি বৃষ্টি বা প্রচুর খরায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়া ছাড়া বর্তমানে তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। বৃষ্টিতে গাছের ডাল তারে স্পর্শ করা মাত্রই লাইন অটো বন্ধ হয়ে যায়, অনুরুপ প্রচন্ড তাপেও লাইন বন্ধ হয়। লাইনটি সচল করা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে, এখানেই মানুষ মনে করে লোডশেডিং হচ্ছে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা সম্ভব হলে মানুষের বিদ্যুৎ নিয়ে ভুল ধারণা কেটে যাবে, আমরা সেই পরিকল্পনা করছি।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল