খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ভারতের সাথে বন্দি বিনিময় চুক্তির ভিত্তিতে সরকার শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে : চিফ প্রসিকিউটর
  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জনের শুনানি চলছে
  শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার তদন্ত শেষ করা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

চৌগাছায় ধানে চিটা, কৃষকের পথে বসার উপক্রম

চৌগাছা প্রতিনিধি

যশোরের চৌগাছায় মাঠের পর মাঠ বোরো ধানে চিটা হয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ কৃষকের বিঘা প্রতি ১ মন ধান হবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় কৃষক চিটা ধান কেটে গো-খাদ্য বানাতে শুরু করেছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান চিটা হওয়ায় কৃষকের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। প্রচন্ড তাপমাত্রা ও ঝড়ো আবহাওয়ার এই অবস্থার সৃষ্টি বলে কৃষি অফিস মনে করছে।

বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে এমন আশায় চলতি মৌসুমে উপজেলার শতশত কৃষক নানা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। কিন্তু সব কিছুই যেন নিমিশেই শেষ, ধানে শীষ বের হওয়ার পর দানা না হয়ে প্রতিটি ধান চিটা হয়ে গেছে। দু’একটি এলাকা বা দু’এক বিঘা জমি নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমির ধানে চিটা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে নানা জাতের বোরো ধানের চাষ হয়েছে। কিন্তু বৈরী আবাহওয়ার কারনে অনেক এলাকার ধানে চিটা হওয়ার খবর আসছে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়ারপাড়া, লস্কারপুর, দিঘলসিংহ, মশ্মমপুর, পৌর এলাকার বাকপাড়া, পাঁচনামনাসহ বেশ কিছু এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকের রোপনকৃত ধানের শীষ বের হয়েছে, ধান গাছ এখনও সবুজ বর্ণ ধারন করে আছে অথচ প্রতিটি শীষ সাদা হয়ে গেছে। এলাকার চাষিরা এটি প্রাকৃতিক দূর্যোগ মনে করছেন, আবার অনেকে বলছেন, কারেন্ট পোকার আক্রমনে ধানের এই অবস্থা।

দিঘলসিংহ গ্রামের হামেদ আলীর ছেলে কৃষক ওলিয়ার রহমান বলছিলেন, তিনি চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে  বিআর-৬০ জাতের ধান চাষ করেছেন। আগাম জাতের ধান বেশ ভালই হয়েছিল। ইতিমধ্যে সব ধানেই শীষ বের হয়েছে কিন্তু ধানে দানা না হয়ে প্রতিটি শীষ চিটা হয়ে গেছে। ধানের গাছ এখনও সবুজ অথচ শীষ সাদা হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ১ বিঘা জমির ধান কেটে গো-খাদ্য (বিচালী) তৈরী করেছেন। যে জমিতে তার ২৮ মন ধান হওয়ার কথা সেখানে ১ মণ ধানও হবে না বলে তিনি মনে করছেন। একই গ্রামের তরিকুল ইসলাম, জহির উদ্দিন, টিপু সুলতান, কবিরুল ইসলাম, আমিনুর রহমানসহ অনেক কৃষকেরই একই অবস্থা।

কৃষকরা জানান, ১বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করতে যেয়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ভাল ফলন হলে কৃষক বেশ লাভবান হয়। কিন্তু এ বছর যে অবস্থা তাতে দেনা শোধ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। সার, ডিজেল, কীটনাশক, পানি সব জায়গায় টাকা বাকী। এই দেনার পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক এমনকি সুদখোরদের নিকট থেকেও চাষিদের টাকা নেয়া আছে। তারা কিভাবে এই দেনা শোধ করবে তা ভেবে পাচ্ছেনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের তালিকা করে প্রনোদনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ উপজেলার সচেতন মহল।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রইচউদ্দিন বলেন, ধানে ফুল ধরনের সময় সহনশীল তাপমাত্রার দরকার, কিন্তু ওই সময়ে প্রচন্ড তাপমাত্রা থাকায় আগাম শীষ বের হওয়া ধানে চিটা হয়েছে। তবে এখন যে ধানের শীষ বের হচ্ছে সেগুলো ভাল আছে। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জমিতে পানি ধরে রাখা ও ধানের শীষে শক্তি বাড়াতে কিছু ওষুধ স্প্রের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!