যশোরের চৌগাছায় ধারালো চাপট ও হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আয়ূব হোসেন খান (৬০) ও ইউনুছ আলী খান (৫৫) দুই ভাইকে হত্যার থানায় মামলা হয়েছে। হত্যাকারী সন্দেহে পুলিশ নারীসহ চারজনকে আটক করেছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, হত্যাকান্ডের পর যশোর ডিবি ও চৌগাছা থানা পুলিশ শুক্রবার রাতব্যাপী অভিযান চালিয়ে জড়িত অভিযোগে বিপুল খান (৪০), তার ভাই মুকুল খান (৩৫), বিপুলের স্ত্রী বিলকিস (৩৫) ও মা রিজিয়া বেগমকে আটক করে। একইসাথে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি চাপাতি ও একটি হাসুয়া দা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক বিপুল ও মুকুল হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের টেঙ্গুরপুর সরদার ব্রিকসের সামনে মুকুল হোসেনের চা’য়ের দোকানের সামনে এ জোড়া হত্যার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন এবং নিহতদের ছোটভাই শের আলী ও নিহত আয়ূব খানের মেয়ে জানান, একই গ্রামের আফজাল খানের ছেলে বিলাল, বিপুল ও মুকুলরা আয়ূব হোসেন ও ইউনূছ আলীদের কাঠগোলা ও ফসলের খেতে কাজ করতো। হঠাৎ বিপুল কাজে যেতে না চাওয়ায় বৃহস্পতিবার আয়ূব তারাবিহ নামাজ শেষে বাড়ি থেকে খেয়ে সরদার ব্রিকসের সামনে মুকুলের চায়ের দোকানে (খন্ডকালিন দোকান পাশেই তাদের তিন ভাইয়ের ঝুপড়ি ধরনের বাড়ি) যায়। তারা কাজে যেতে না চাওয়ায় সেখানে আয়ূব খানের সাথে বিপুলের কথা কাটাকাটি হয় এবং বিপুল আইয়ূব খানকে তিনটি ঘুষি মারেন। তখন আয়ূব খান বাড়িতে গিয়ে মেয়েদের নাম ধরে ডেকে বলেন আমি বৃদ্ধ মানুষ তবুও বিপুল আমাকে মেরেছে। তোমাদের মেঝ চাচা ইউনুছ ও ভাই আসাদুজ্জামান ডাকো। এরপর তারা তিনজনই মুকুলের ওই চায়ের দোকানে গিয়ে অপমান করার কারণ জানতে চান। এসময় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকা মুকুল, বিপুল, বিল্লাল, তাদের স্ত্রী ও তাদের বাবা আফজাল খান ও মা রিজিয়া বেগম মিলে আয়ূব খান, তার ভাই ইউনুছ খান এবং ছেলে আসাদুজ্জামান খান রনিকে চাপাতি ও হাসুয়া দা দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। এতে ইউনুছ খানের দুটি হাত কব্জি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এবং মাথা ও শরিরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। মাথাসহ শরিরের বিভিন্নস্থানে আঘাত পেয়ে মারাত্মক আহত হয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা আয়ূব খান ও আসাদুজ্জামান খানকে পুলিশ দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়ূব হোসেন খানের মৃত্যু হয় এবং মাথায়, কাঁধে ও হাতে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অপারেশন শেষে তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, হত্যাকান্ডের পর যশোর ডিবি ও চৌগাছা থানা পুলিশ উপজেলা জুড়ে অভিযান চালিয়ে টেঙ্গুরপুর গ্রামের একটি মাঠে পালিয়ে থাকা অবস্থায় বিপুল খান (৪০), তার ভাই মুকুল খান (৩৫), বিপুলের স্ত্রী বিলকিস (৩৫) ও মা রিজিয়া বেগমকে আটক আটক করা হয়। এসময় তাদের দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি চাপাতি ও একটি হাসুয়া দা উদ্ধার করা হয়। শুকুবার দুপুরে জেনারেল হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় বিপুল খান, মুকুল খানসহ আটক চারজন ও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় তাদেরকে শুক্রবার যশোর আদালতে পাঠানো হলে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিপুল ও মুকুল জবানবন্দি দিয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই