যশোরের চৌগাছায় এক কৃষক আম বাগানের সাথে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। সাড়ে চার বিঘা জমিতে কুমড়া লাগিয়ে আমের পাশাপাশি অতিরিক্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় করেছেন। ওই কৃষকের মত অনেকেই বর্তমানে সাথী ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। উপজেলার পাতিবিলা গ্রামের মৃত তবিবর রহমানের ছেলে কৃষক তানজিমুর রহমান (৪৮)।
কৃষি কাজে নতুন কিছু করাই যেন তার নেশা। ধান, পাটের পাশাপাশি তিনি নানা ধরনের ফল ও সবজির চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। তার কর্মে আকৃষ্ট হয়ে এলাকার অনেকেই তানজিমুর রহমানকে অনুসরণ করতে শুরু করেছেন। তিনি এ বছর সাড়ে ৪ বিঘা থাইকাটিমন জাতের আম বাগানে মিঠ কুমড়ার চাষ করেন। জমিতে একই রকম সার, কীটনাশক এমনকি সেচ দিয়ে বাড়তি প্রায় আড়াই লাখ টাকার মিঠ কুমড়া বিক্রি করতে পেরেছেন এই কৃষক।
সোমবার সরেজমিন যেয়ে দেখা যায়, আম গাছের নিজে মাটিতে যবথব ভাবে পড়ে আছে মিঠ কুমড়া। কৃষক তানজিমুর রহমান আম বাগান পরিচর্জা করছেন। এ সময় তিনি বলেন, ধান পাটের পাশাপাশি বিঘার পর বিঘা জমিতে নানা ধরনের ফল চাষ করাই যেন তার নেশা। এ বছরও তার প্রায় ৭ বিঘা জমিেেত আম বাগান আছে আর আড়াই বিঘা জমিতে আছে ড্রাগন বাগান। আম বাগানের মধ্য হতে সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে তিনি লালতীরের সুইটি জাতের মিঠ কুমড়া লাগান। একই জমিতে দুই চাষ করায় তার বাড়তি কোন ব্যয় বা পরিশ্রম করতে হয়নি। অথচ অল্প দিনেই আড়াই লাখ টাকার কুমড়া বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, বার মাসই আম হবে এমন জাত (থাই কাটিমন আম) সংগ্রহ করে সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে রোপন করেছি। প্রতিটি গাছে এবার মুকুল আসে। প্রথম দিকের মুকুল ভেঙ্গে ফেলা হয়।
তবে এখন যে সব মুকুল আসছে তা রেখে দিয়েছি। জ্যৈষ্ঠ্য মাসে যখন অন্যান্য আম পাকা ধরবে তখন এই আম বড় হতে থাকবে। নতুন জাতের আম লাগানোর পর জমিতে অন্য কোন ফসলের চাষ করা যায় কিনা ভাবতে থাকি। একপর্যায়ে সমুদয় জমিতে মিঠ কুমড়ার চাষ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। বাজার থেকে লাল তীরের সুইটি জাতের মিঠ কুমড়ার বীজ বপন করি। প্রতিটি গাছের ডগায় ডগায় মিঠা কুমড়া ধরেছে। এখনও পর্যন্ত বাজার দর যা আছে তাতে করে আড়াই লাখ টাকার কুমড়া বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রইচউদ্দিন বলেন, চৌগাছার কৃষকরা নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করে বেশ আগে থেকেই কৃষিতে চমক সৃষ্টি করে আসছে। এক ফসলের সাথে আরেক ফসলের চাষ এটি নিঃসন্দেহে একটি ভাল দিক। কৃষক যাতে আরও লাভবান হয় তার জন্য আমরা কৃষি অফিস সর্বদা কৃষকদের সহযোগীতা প্রদান করে যাচ্ছি।
খুলনা গেজেট/কেএম