যশোরের চৌগাছার ছারা বালিকা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী গোলাম মোস্তফা তড়িঘড়ি করে একটি পত্রিকায় তফসিল ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি দেন। ফলে অভিভাবক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকবৃন্দ।
লিখিত অভিযোগে অভিভাবকবৃন্দ জানিয়েছেন, ছারা বালিকা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী গোলাম মোস্তফা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি করার জন্য অত্যান্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। চলতি মাসের ২ তারিখে ওই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং চৌগাছায় আসা সকল পত্রিকা সে গায়েব করে দেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৬ হতে ৮ মার্চ মনোনয়ন বিক্রি, ১০ মার্চ মনোনয়ন যাচাই ও বৈধ প্রার্থীর নাম ঘোষণা, ১৩ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ এবং ২৪ মার্চ ভোট গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
অভিভাবক এনামুল ইসলাম মৃধা, আনিছুর রহমান, নিতাই সরকার, মনা সর্দার, বাসুদেব ও মুকুর হোসেন মৃধা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে নেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার আগে তিনি এডহক কমিটির সভাপতি সাবেক প্রধান শিক্ষক এসএম অতিয়ার রহমানের বাসায় যান। সেখানে প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা দিতে হবে তাই সকল কাগজপত্রে সহি লাগবে। আপনি স্বাক্ষর করে দিলেই শিক্ষার্থীদের টাকা প্রদান করা যাবে। অসুস্থ্য থাকার কারণে সরল মনে এসএম আতিয়ার রহমান সেই কাগজে স্বাক্ষর করেন। মূলত ওই কাগজই ছিল ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রাথমিক কাগজপত্র। অথচ পরবর্তীতে কৌশল করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা লিখে শিক্ষা অফিসে জমা দেন। নিয়ম অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও জনসাধারণের জানানোর জন্য মাইকিং করা, শ্রেণিকক্ষে ঘোষণা ও নোটিশবোর্ডে ঘোষিত তফসিল টাঙ্গানোর নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি বলে অনেকে জানান।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি এসএম আতিয়ার রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আমাকে কিছুই জানাননি। বরং তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করা হবে মর্মে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকার কারণে বিশ্বাস করে সহি দিয়েছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি বিধি মোতাবেক সবকিছু করেছি। কোন অনিয়ম করা হয়নি।অভিযোগগুলো মিথ্যা।
নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার নাসরিন সুলতানা জানান, আমাকে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি সেই দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। তবে শুনেছি একটি অভিযোগ স্যারের কাছে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি স্যার দেখবেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই