খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে ধান চালের অবৈধ মজুদ ঠেকাতে খুলনার মাঠ দিন রাত চষে বেড়াচ্ছেন ফুডের ১০টি টিম। চল্লিশ কর্মকর্তার চোখে পড়ছেনা অবৈধ মজুদ। প্রায় প্রতিদিন ধান চালের দাম বাড়ছে। মূল্য বাড়ার কারণ হিসেবে তাদের ভাষ্য শিল্পপতিরা বোরো মৌসুমের শুরুতে ধান কিনে মজুদ করেছে। রবি ও সোমবার মোটা চাল ৪১ টাকা ও চিকন চালের মূল্য ৬৫ টাকা ছিল। এ তথ্য জেলা খাদ্য অফিসের, সোমবারের।
জুন মাসের শুরুতে সব ধরণের চালের মূল্য কেজিপ্রতি চার থেকে পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো স্বোচ্চার হয়। গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং অবৈধ মজুদদারদের চিহ্নিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে টিম গঠনের নির্দেশ দেন। খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে গত ২ জুন খুলনা মহানগরীতে একটি ও নয় উপজেলায় একটি করে টিম গঠন করা হয়। টিমের দায়িত্ব ৯ জুন পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হলেও তারা জুন জুড়ে মনিটরিং করবে। খুলনা নগরীতে সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে এবং উপজেলা পর্যায়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে টিমগুলো দিনরাত চষে বেড়াচ্ছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: বাবুল হোসেন এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, অবৈধভাবে খাদ্য শস্য মজুদ করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিন বছরের জেল ও জরিমানা করা হবে। একইসাথে অবৈধ মজুদকৃত পণ্য বাজেয়াপ্ত করা হবে।
জেলার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, জেলার ১০৫ টি রাইসমিলের কোথাও ধান চালের অবৈধ মজুদ চোখে পড়েনি। উপজেলা পর্যায়ের টিমগুলো দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্স ব্যতীত এক মেট্রিক টনের অধিক খাদ্য মজুদ না রাখার জন্য প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে।
বটিয়াঘাটা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: জাকির হোসেন তথ্য দিয়েছেন ৪৬ টি মিলে ধান চালের অবৈদ মজুদ নেই। মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বটিয়াঘাটার আকুঞ্জি রাইস মিলের মালিক আতিকুর রহমানের ভাষ্য, ধান কাটার শুরুতে বৃষ্টিতে বোরোর একটি অংশ পচে গেছে। ফলে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। গোপালগঞ্জ ও বরিশাল থেকে বোরো আসার পরিমাণ কমে গেছে।
অপর একটি সূত্রের দাবি, এসিআই, নাবিল, আকিজ, প্রাণ, তীর ও শেখ গ্রুপ বোরো ধান কিনে মজুদ করেছে। ধান চাল সংকটের এটিও একটি কারণ।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের রেকর্ড অনুযায়ী মোটা চাল ৪১-৪২ টাকা, মাঝারি ৪৮-৪৯ টাকা, চিকন ৫৮-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের সূত্র জানান, এ বছরের ৩ জানুয়ারি চালের একদফা মজুদ বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, শীতকালে ধান শুকাতে দেরী হওয়ায় মূল্য বেড়েছে। সে সময়েও অবৈধ মজুদ পাওয়া যায়নি। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বেসরকারীভাবে চাল আমদানির সুপারিশ করা হয়। ২০২১ সালের ৫ আগস্ট মনিটরিং কমিটি খাদ্য অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠায় অসাধু ব্যবসায়ীদের কারিসাজিতে ধান ও চালের বাজার উর্ধ্বমুখী। এ সময়ে মূল্য বাড়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন দক্ষিণাঞ্চলে মোটা চালের আবাদ কমেছে। এ সূত্রের তথ্য, গেল বছরের ১০ অক্টেবর মোটা চাল ৩৮-৩৯ টাকা, মাঝারি ৪১-৪২ এবং চিকন ৫৮-৫৯ টাকা দরে বিক্রি হয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই