খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চাওয়াই নদীতে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই শিশুর
  গরুবাহী নছিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত
  জামালপুরে ধান মাড়াই করতে গিয়ে তাঁতী লীগ নেতার মৃত্যু
  দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন, শিশু নাজমুল মারা গেছে, নানী আশঙ্কাজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় তালাক দেওয়া স্ত্রীকে শিক্ষা দিতে ঘরের মধ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ নাতি তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র নাজমুলের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৬ অক্টোবর) ভোর রাত একটার দিকে ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পাশের শয্যায় তার নানী ফতেমা খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহত শিশু নাজমুল হোসেন( ৮) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের আল আমিনের ছেলে। সে কালীগঞ্জের ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কাজলা গ্রামের আব্দুস সাত্তার সরদার জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হওয়ার পর এক মাত্র ছেলে নাজমুলকে তার বাড়িতে রেখে ভাই শরিফুলের সঙ্গে এক বছর আগে ভারতের তামিলনাড়ুতে কাজ করতে যায় মেয়ে নাজমা। সেখান থেকে বাড়িতে আসার পর খালাত ভাই কালীগঞ্জের ভাঙ্গানমারির ৮০ বিঘার বাসিন্দা সবুজ গাতিদারের সঙ্গে বিয়ে হয় নাজমার। নাজমুল তাদের (নানা) বাড়িতে থেকে ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াশুনা করতো।

বিয়ের এক সপ্তাহ পর নাজমাকে নিয়ে রাজবাড়িতে একটি কারখানায় কাজে লাগিয়ে দেয় সবুজ। সেখানে নাজমাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাড়ি আসে নাজমা। আগষ্ট মাসের শেষের দিকে নাজমা সবুজকে তালাক দেয়। নলতার এক ব্যাক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে সৌদি আরবে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে ভাষা শিক্ষার জন্য গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় যায় নাজমা।

আব্দুস সাত্তার সরদার আরো বলেন, তিনি অন্যের ঘেরের বাসায় নৈশ প্রহরীর কাজ করায় সবুজ ও তার পরিবারের সদস্যরা শনিবার (২ অক্টোবর) রাত পৌনে দুটোর দিকে তাদের বাড়ির দরজায় ছিকল তুলে দিয়ে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছিটিয়ে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে তার স্ত্রী ফাতেমা ৭৫ শতাংশ ও নাতি ৯৫ শতাংশ নাজমুল পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোর রাত একটার দিকে নাজমুল মারা যায়। তবে তার স্ত্রী ফতেমা খাতুনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের কর্তর‌্যরত চিকিৎসক ডাঃ তৌফিক আহম্মেদ বলেন, নাজমুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ পোড়া ছিল। পেট্রোলের আগুনে ফাতেমার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। নাজমুল মারা গেলেও তার নানীকে বাঁচানো যাবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নাজমুলের লাশ বাড়িতে আনা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত সবুজ গাতিদারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার ধারা সংযোজনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!