খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩ মে, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরের জয়দেবপুরে মালবাহী ট্রেনে যাত্রীবাহী ট্রেনের ধাক্কা, আহত অন্তত ৫০
  ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দিলো তুরস্ক

গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দুদকের অনুসন্ধান টিম গঠন

গেজেট ডেস্ক

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ ও প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে তিন সদস্যের টিম গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সোমবার (১ আগস্ট) সংস্থাটির তিন সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। যেখানে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

টিম প্রধান করা হয়েছে উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানকে। আর টিমে অপর সদস্যরা হলেন— সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার কথা জানায় সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠান। ওই অভিযোগ সম্বলিত প্রতিবেদন কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অভিযোগগুলো হলো— অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট।

শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফি’র নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন।

শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ।

কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।

পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মাহবুব হোসেন বলেন, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশন অনুসন্ধান শুরু করেছে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ হওয়ার পরে আপনারাই জানতে পারবেন এর সঙ্গে কে কে সম্পৃক্ত।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানকালে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা অবশ্যই গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবে। অনুসন্ধানের সময় তিনি বিধিবিধান অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন।

প্রসঙ্গত, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়েছে। এরপর সেই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ জন কর্মী। এই ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলবও করেছিলেন হাইকোর্ট।

এছাড়া গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। যেখানে অভিযোগ করা হয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা তাদের দেওয়া হয়নি।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!