খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন স্বামী, বেঁচে গেলেন স্ত্রী
  সরকারি সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে : ইসি রাশেদা
  ময়মনসিংহে বাসের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত

গাবুরায় বাস্তুচ্যুত হয়ে দিশেহারা হাজারো পরিবার, চায় মাথা গোঁজার ঠাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার সুরক্ষায় মেগা প্রকল্পের আওতায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। এতে উপকূলীয় এই ইউনিয়নে বসবাসকারীদের মধ্যে বইছে স্বস্তির হাওয়া। তবে, চরম বিপাকে পড়েছে নদীর পাড়ের বাস্তুচ্যুত হাজারো পরিবার।

উপকূলের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-২ এর পক্ষ থেকে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা, চাঁদনীমুখা, হরিশখালি ও ডুমুরিয়াসহ বেশ কিছু এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে বসবাস করা হাজারো পরিবারকে ঘরবাড়ি ভেঙে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাউবো’র এই নির্দেশের ফলে পরিবারগুলো পড়েছে চরম বিপাকে। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না করে তাদেরকে সরে যাওয়ার নির্দেশে আশ্রয় হারানোর ভয়ে পরিবারগুলোর সদস্যদের মধ্যে পড়েছে কান্নার রোল। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাবেন, সেই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো।

এদিকে কোথায় যাবেন, কোথায় আশ্রয় নেবেন না ভেবেই গাবুরার ৯নং সোরা ও চাঁদনীমুখা এলাকায় বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসকারীদের অনেকেই ইতিমধ্যে তাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে নিতে শুরু করেছেন। ফলে আশ্রয় হারানো পরিবার গুলোর মাঝে বিরাজ করছে এক নিষ্ঠুর নীরবতা।

তারা বলেন, বাপ-দাদাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বলতে কিছুই ছিল না। তাই বেড়িবাঁধের কোলে ঘর বেঁধে জীবন কাটছে তাদের। এভাবেই তাদেও কেটেছে প্রায় দুই প্রজন্ম। হঠাৎ ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে সবাই। এখন সবাই গৃহহারা। ছোট ছোট বাচ্চা ও পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো? কি করবো কিছুই মাথায় আসছে না তাদের। তারপরও বৃহত্তর স্বার্থে তাদেরকে সরে যেতে হবে।

গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের ইয়াকুব শেখ বলেন, বাপ দাদার আমল থেকে এই বাঁধের পাশে আছি। এখন ঘর ভেঙে নিতে হচ্ছে, এখন কোথায় যাবো, নেই বাড়তি জমিজমা। বিকল্প বসতির জন্য তারা বলেন, ৯নং সোরার চরে একটা গুচ্ছগ্রাম করে দিলে আমাদের ঠাঁই হতো।

গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জি,এম মাসুদুল আলম বলেন, প্রতিবছর প্রাকৃতিক দূর্যোগে বেড়িবাঁধ ভেঙে গাবুরা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে এই ইউনিয়নের বহু মানুষ বাস্তুহারা হয়ে গ্রাম ছাড়া হয়েছে। বর্তমানে এই দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা সুরক্ষায় মেগা প্রকল্পের আওতায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। যে কারণে বেড়িবাঁধের পাশে আশ্রয় গ্রহণকারিদের সরে যেতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ৯নং সোরা নদীর চরে হাজার হাজার বিঘা খাস জমি পড়ে আছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি গাবুরার বাস্তুচ্যুত মানুষের কথা মাথায় রেখে একটি গুচ্ছগ্রাম তৈরি করে দিতো, তাহলে মানুষগুলো মাথা গোজার ঠাঁই পেত।

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!