খুলনার গল্লামারী মোড়ে ময়ূর নদীর ওপর নির্মিত অর্ধশত বছরের পুরাতন সেতু ভাঙার কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। বুধবার সকাল থেকে সেতু ভাঙার কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিনের পুরাতন সেতু ভাঙা দেখতে শত শত মানুষ দুই পাশে ভিড় করে।
এদিকে সেতু ভাঙার কাজ শুরু হওয়ায় একটি সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে গতকাল দিনভর যানজট ছিলো গল্লামারী মোড়ে। নতুন সেতু নির্মাণ পর্যন্ত এই যানজট অব্যাহত থাকবে। এজন্য যানবাহনকে বিকল্প পথ (সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল) ব্যবহারের পরামর্শ দেওয় হয়েছে।
সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, পুরাতন সেতুটি ভেঙে ফেলে সেখানে রাজধানীর হাতির ঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন চার লেনের সেতু নির্মাণ করা হবে। গত ১২ অক্টোবর নতুন সেতু নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল।
সূত্রটি জানায়, গত শতকের মধ্যবর্তী সময়ে গল্লামারীর ময়ূর নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দিন দিন মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ২০১৫ সালে এর পাশে আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০২১ সালে দুটি সেতু ভেঙে ফেলে সেখানে ৪ লেনের আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে সড়ক বিভাগ। এরই অংশ হিসেবে গতকাল ১৫ নভেম্বর থেকে সেতু ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিন সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মঙ্গলবার থেকে সেতু ভাঙার প্রস্তুতি শুরু হয়। যান চলাচল বন্ধের জন্য দুই সেতুর মাঝখানে টিনের বেড়া দেওয়া হয়। বুধবার ভোর থেকে পুরাতন সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সকাল ৭টা থেকে ২৫ জন শ্রমিক একযোগে সেতু ভাঙার কাজ শুরু করে। সেতু ভাঙার কাজ দেখতে দুই পাশে জড়ো হয়েছে উৎসুখ জনতা। নতুন সেতু নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের শ্রমিকরাই সেতু ভাঙার কাজ শুরু করছেন। স্কেভেটর এবং কংক্রিট কাটার হাইড্রোলিক ব্রেকার দিয়ে সেতু ভাঙা হচ্ছে।
খুলনা সড়ক বিভাগের কার্য সহকারী মীর আঃ রাজ্জাক খুলনা গেজেটকে বলেন, প্রথম দিন সকাল ৭টা থেকে সেতুটি ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়ে একটানা চলে বিকাল টা পর্যন্ত। ২৫ জন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দক্ষ শ্রমিক ভাঙ্গার কাজটি করছে। ১ম দিনে কাজের অগ্রগতি ২০ শতাংশ। আশা করি ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে সেতুটি ভাঙ্গার কাজ সম্পন্ন হবে।
প্রসঙ্গত, গল্লামারীতে নতুন সেতুটি হবে ৪ লেনের। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ কোটি টাকা। সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ৬৮ দশমিক ৭০ মিটার এবং প্রস্থ হবে ১৩ দশমিক ৭০ মিটার। ২০২৫ সালের ১ এপ্রিলের মধ্যে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।