প্রচন্ড তাপপ্রবাহে ধুকছে খুলনা অঞ্চল। গত ১১ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে খুলনা বিভাগে। আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই অঞ্চলেই। আর এই তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে আরও ৪/৫ দিন। এসময়ে বাড়তে পারে তাপমাত্রা। আর এরপরই সম্ভাবনা রয়েছে বৃষ্টির। এমনটাই জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাও। এ অবস্থায় জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষেরা।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। খুলনায় আজকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলায়। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আজকেও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া যশোরে ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মোংলায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুষ্টিয়ায় ৩৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, তাপমাত্রা আরও ৪/৫ দিন অব্যাহত থাকবে। কিছুটা বাড়তে পারে। তবে আগামী ১৭ এপ্রিলের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দু-এক জায়গায় কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, ১১ দিনের ব্যবধানে খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। গত ৩১ মার্চ পিক আওয়ারে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকদের বিদ্যুৎতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৬১৮ মেগাওয়াট। আর সবশেষ ১১ এপ্রিল বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২ হাজার ২৯৮ মেগাওয়াট। ১১ দিনের ব্যবধানে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ৬৮০ মেগাওয়াট।
ওজোপাডিকোর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শহিদুল আলম বলেন, মার্চের চেয়ে এপ্রিলে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। তবে চাহিদা বাড়লেও আমাদের সরবরাহ ঠিক আছে। বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। এদিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছে খুলনা অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ।
খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী সড়কে কাজ করা দিনমজুর খোরশেদ আলম বলেন, প্রচন্ড গরম পড়েছে। রমজানের শুরুতে গরম কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনেক গরম। গরমে সারা শরীর ঘেমে যাচ্ছে। পানি পিপাসা লাগে, শরীর দুর্বল হয়ে যায়। রোজা রেখে কাজ করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রোদের প্রচন্ড তাপে বেশিসময় দাড়ানো যায় না। তবুও কাজ করতে হয়। এদিকে রাস্তার কাজ চলছে ধুলাবালি উড়ে আসছে। সবমিলিয়ে অস্বস্তি লাগে।
নগরের শিববাড়ি পাবলিক হলের সামনে দাড়িয়ে থাকা রিক্সাচালক ওবায়দুল বলেন, গরমে অবস্থা খুব খারাপ। রিক্সা চালাতে গিয়ে ঘেমে গোসল দিয়ে উঠছি। রোদের তাপে মাথা যন্ত্রণা করে। ক্লান্ত হয়ে পড়ছি; বেশিক্ষণ রিক্সা চালানো যায় না। বিশেষ করে দুপুরে খুব বেশি গরম লাগে। রোদে পুড়ে যায়। তাই ভাড়া টানার পর ছায়াতে কিছু সময় জিড়িয়ে নিতে হয়।
নগরীর খালিশপুর পার্কের মোড়ের বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদ সবুজ বলেন, আজ রোদের তাপ অনেক বেশি। বাইরে বের হলে রোদে গা জ্বলে যাচ্ছে। দিনে-রাতে কয়েকবার গোসল করছি। আর খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাহিরে বের হচ্ছে না। এছাড়া ঘরে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হচ্ছে সারাক্ষণ।
খুলনা গেজেট/এমএম/কেডি