দ্রব্যমূ্ল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে মাত্র ৮০-৮৫ টাকায় খুলনায় মিলছে ব্রয়লার মুরগীর মাংশ। শুধু ব্রয়লার মুরগীই নয়, সাধ আর সাধ্যকে এক করতে কেনা যাচ্ছে গরুর মাংশ, মাছসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে এমনই মহতী উদ্যোগের উদ্যোক্তা ইমরুল হোসেন মোস্তফা। তিনি খুলনা নগরীর দক্ষিণ হরিণটানা এলাকার বাসিন্দা ও মেসার্স জব্বার স্টোরের স্বত্বাধিকারী।
শুধু ব্রয়লার মুরগীর মাংস নয়, গরুর মাংশ, মাছ, শাক সবজিসহ রান্না করার সকল প্রকার নিত্য সামগ্রী সর্বনিম্ন ২ টাকা, ৫ টাকা থেকে শুরু করে যার যতটুকু পরিমাণ প্রয়োজন এই প্রক্রিয়ায় সকল পণ্য সামগ্রী স্টোরটিতে বিক্রয় করা হয়।
দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতি ইমরুলের এমন উদ্যোগে খুশি সাধারণ মানুষ। তারা বলেছেন, তাঁর উদ্যোগেে এখন অনেকেরই সাধ ও সাধ্যের মিল ঘটাতে পারছেন।
হরিণটানার জব্বার স্টোরে প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগী ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। একটি আস্ত মুরগী ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে সর্বনিম্ন পরিমাণ ভোক্তাদের দেওয়া হয়। একই ভাবে বিক্রি করা হয় নানা প্রজাতির মাছ, তরিতরকারী ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য।
পেশায় নৈশ্য প্রহরী পঞ্চাশোর্ধ আবুল হোসেন। দুই ছেলে স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন খুলনার লবণচরা থানার দক্ষিণ হরিনটানা এলাকায়। মাসে আয় টেনেটুনে প্রায় ৯ হাজার টাকা। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে স্বল্প বেতনে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। দুই ছেলে স্ত্রী নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিত্যদিন। অনেকটা ‘নুন আনতে পানতা ফুরানো’র মতো অবস্থা। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে ভালো খাবার খাওয়া তার কাছে এখন প্রকার স্বপ্ন। ৭’শ সাড়ে ৭’শ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস ক্রয় করে খাওয়া তার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়। সম্প্রতি ব্রয়লার মুরগীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ন্যূনতম ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগী কিনতে সাড়ে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা খরচ করতে হয়। একটা আস্ত মুরগী কিনে খাওয়াও আবুল হোসেনের জন্য অনেকটা কষ্টসাধ্য। তাই তিনি বেছে নিয়েছেন ওই এলাকার মেসার্স জব্বারের স্টোর।
আবুল হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ে একটা মুরগী কিনতে গেলে ৫০০ টাকা। সব সময় কেনার সমর্থ হয় না। কেটে বিক্রি করলে আমাদের সাধ্যমতো কিনতে পারি। আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়েছে আমরা উপকৃত হচ্ছি। আমাদের আয়-রোজগার কম। একটা বড় মাছ কেনার সামর্থ্য নেই। সেই হিসেবে কেটে বিক্রি আমাদের অনেক মানুষের সুবিধা হচ্ছে। এটার জন্য আমরা খুশী।
একই এলাকার মনিরা বেগম বলেন, একটা মুরগী কিনতে ৪/৫’শ টাকা। যেহেতু কেটে বিক্রি করছে। আমরা অনেক উপকৃত হচ্ছি।
জব্বার স্টোরের স্বত্বাধিকারী ইমরুল হোসেন মোস্তফা খুলনা গেজেটকে বলেন, এটা আমার বাবার প্রতিষ্ঠান। আমার বাবা ও এই প্রক্রিয়ায় ব্যবসা করতেন। আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসার পর এটা চালু করেছি। বর্তমান সময়ে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম খুব বেশী। স্বল্প আয়ের মানুষদের কিভাবে খাওয়ানো যায় এটা মাথায় রেখে আমি মাছ, ব্রয়লার মুরগীর মাংশ, গরুর মাংশসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী পরিমাণে অল্প বিক্রি করি।
তিনি বলেন, ২৪০ টাকা কেজি দরে একটা ব্রয়লার মুরগী কিনতে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা লাগে। একটা মুরগী আমি কেটে পিচ পিচ করে টুকরো টুকরো করে ৮০-৮৫ টাকায় বাজার দর অনুসারে বিক্রি করি। অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যার যতটুকু প্রয়োজন ২ টাকা, ৩ টাকা, ৫ টাকার বিক্রি করে থাকি। মানুষ উপকৃত হলে আমিও খুশী।
খুলনা গেজেট/কেডি