জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নতুন নিয়মে চলছে ট্রেনের টিকেট বিক্রি। আর তা কিনতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন সাধারণ যাত্রীরা। নতুন নিয়ম সম্পর্কে অবগত না থাকায় অনেকেই টিকেট না কিনেই খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
দুপুর ১২ টার দিকে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে এমন চিত্র দেখা যায় । অনেকেই নতুন নিয়ম সম্পর্কে নানা রকমের মন্তব্য করেন।
আলী রাজ পারভেজ ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরী করেন। তিনি স্ত্রীকে সাথে নিয়ে রাজশাহীর সৈয়দপুরে শ^শুর বাড়িতে বেড়াতে যাবেন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে খুলনা রেল স্টেশনে টিকিট কিনতে আসেন। সেখানে গিয়ে তিনি বিড়ম্ববনার শিকার হন।
আলী রাজ পারভেজ বলেন, আগে থেকে তিনি জানতেন না যে, টিকেট কাটতে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে এনে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। সেটা যখন তিনি জানতে পারেন তখন তা অনেক দেরি হয়ে যায়। টিকেট কাউন্টারের সামনে থেকে ফিরে তাকে পূণরায় বাড়িতে গিয়ে এনআইডি নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকেট নিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যার টিকেট তাকে নিতে হবে, অন্য কেউ নিলে হবে না। পরে ফোন করে তিনি তার স্ত্রীকে স্টেশনে ডেকে আনেন। সহজ প্রক্রিয়াকে সরকার জটিল করে ফেলল।
রেল স্টেশনে কথা হয় নগরীর নিরালা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোতালেবের সাথে। তিনি বলেন, না জেনেই স্টেশনে এসেছি। প্রথমে কিভাবে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকেট কাটতে হয় সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ ছিলাম। স্টেশনের কেউ কোনো রকমের সহযোগীতা করেনি। পরে এক ছাত্র তাকে সহযোগীতা করেছে। এস এম এস পাঠাতে গেল ৫ টাকা খরচ হয়। এটা হয়রানির সামিল।
শিরীন পারভীন টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা। কাজের সুবাধে তাকে চুয়াডাঙ্গায় যেতে হবে। টিকেট নিতে এসে তাকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে না থাকাতে তাকে কাউন্টারের সামনে থেকে পূণরায় ফিরে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, অনেকেই ইন্টারনেট বা মোবাইল সম্পর্কে তেমন অবগত নয়। তাছাড়া সরকার অনেক কাজ করার আগে মোবাইলে এসএমএস দেয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সরকার জনগণকে সচেতন করার জন্য কোন শর্ট মেসেজ দেয়নি। দিলে হয়ত বা মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হত না। তাই ট্রেনের টিকেট ব্যবস্থা সহজ করার জন্য তিনি সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে খুলনা রেলস্টেশন মাষ্টার মানিক চন্দ্র সরকারের অফিস কক্ষে গেলে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তার ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য অনলাইনে টিকিট ছাড়ার সাথে সাথে কালোবাজারিরা বিভিন্ন নামে টিকিট কেটে রাখে। পরে, ট্রেন ছাড়ার আগে তারা দ্বিগুণ দামে তা যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে। অথচ যাত্রীরা অনলাইন বা স্টেশনের কাউন্টারে টিকিট পায়না। রেলের ভাবমূর্তি রক্ষায় সরকার এ পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় ফলো করে প্রচার করা হয় জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকেট পাওয়া যাবে না। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (১ মার্চ) থেকে ট্রেনের টিকেট কাটতে সরকার এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করে।