খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯০
  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শুরু, হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী দেখা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ এর উপর হামলার প্রতিবাদে খুলনায় ২৪ ঘন্টার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (১ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকাল ৬টা পর্যন্ত খুলনা জেলার স্বাস্থ্য সকল প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকরা পূর্ণকর্মবিরতি চলবে।  সকাল থেকেই সরকারি হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় বিএমএ ভবন খুলনার কাজী আজহারুল হক মিলনায়তনে সাংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। তিনি বলেন, চিকিৎসকের ওপর হামলাকারী  এ এস আই নাঈম ও তার সঙ্গীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনা হলে বুধবার (১ মার্চ) সকাল ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকাল ৬টা পর্যন্ত খুলনা জেলার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (সরকারী, বেসরকারী স্বায়ত্বশাষিত) সকল প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকরা পূর্ণকর্ম বিরতি পালন করা হবে। শুধুমাত্র মানবিক কারণে জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। এছাড়া বুধবার সকাল ১০ টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহি:বিভাগ চত্ত্বরে
বিক্ষোভ সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা মহানগরীর শেখপাড়ায় অবস্থিত হক নার্সিং হোমে অপারেশন চলাকালীন হামলা করে রোগীর স্বজন শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের বার্ন প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ্কে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত করে এবং তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয় তিনি একজন মুমূর্ষ রোগীর অপারেশন করছিলের সেখান থেকে ১ মাস পূর্বে অপারেশন করা রোগীর জটিলতার ওজুহাতে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশে কর্মরত এএসআই নাঈম ও তার সঙ্গীরা তাকে জোর করে অপারেশন মাঝপথে বন্ধ করে দেয়। এসময় তার উপর পৈশাচিকভাবে ঝাপিয়ে পড়ে এবং শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। সংরক্ষিত প্রবেশ অধিকারের নিরাপদতম স্থান অপারেশন থিয়েটার ভাংচুর করা হয়েছে। আবারও আপনাদের মাধ্যমে খুলনা বিএমএ এর পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ, নিন্দা, তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃনা প্রকাশ এবং বিচার দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সহকর্মী ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ্ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেবিনে শারিরিক ও মানুষিক অস্বস্থিতে বেঁচে আছে। বহুবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আমলাদের বোঝানো হয়েছে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান সমূহ ঝুকিপূর্ণ বিধায় নিরাপত্তা বিধান করা। কখনোই কর্ণপাত করেননি কোন কর্তৃপক্ষ বরং চিকিৎসকদের উপর নেমে এসেছে নতুন নতুন খড়গ। এবার ঘটেছে আরও মারত্নক ভয়ানক ঘটনা। আইনের রক্ষক পুলিশের পোশাক পরিহিত এএসআই নাঈম ও তার সঙ্গীরা চিকিৎসকের উপর ঝাপিয়ে পড়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। সভ্য সমাজে এই ধরনের পৈশাচিক ঘটনা বিরল। দীর্ঘ তিন ঘন্টা যাবত একজন চিকিৎসককে আটকে রেখে উপহাস করা হয়েছে বিভত্স
ভাষায় গালি গালাজ আর নগ্ন আচারনের বর্ননা শুনলে গা শিউরে ওঠে। সেই ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছে খুলনার হক নাসিং হোম। আর নির্বিকার অসহায়ভাবে চিকিৎসক সহ্য করেছেন সেই বর্ণনাতীত নির্যাতন।

ডা. বাহার বলেন, চিকিৎসা পাওয়া মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার, রোগী বা চিকিৎসা প্রত্যাশি জনগনের এই মৌলিক অধিকারপূরণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্র বা সরকারের। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুষ্ঠিত হবে। চিকিৎসকরা রাষ্ট্রের সীমিত ব্যবস্থাপনায় বহুলাংশে জনগনের এই মৌলিক অধিকারপূরণে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু নিজেকে অরক্ষিত ও অনিরাপদ রেখে চিকিৎসকরা আর কর্মস্থলে যেতে চাই না। ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লার মত একজন সৎ নিষ্ঠাবান ও পরোপকারী সহকারী অধ্যাপক এবং একটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের উপর এই ধরনের অত্যাচারের দৃশ্য দেখে সমস্ত চিকিৎসক সমাজ ব্যাপকভাবে সংক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন বিএমএ খুলনার সাধারণ সম্পাদক ডা. মেহেদী নেওয়াজ ও যুগ্ম সম্পাদক ডা. নেওয়াজ মোস্তাফি চৌধুরী।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!