সরকার দর নির্ধারণের পর ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও খুলনার বাজারে সরকার নির্ধারিত দরে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়নি। উল্টো ব্যবসায়ীরা আরেক দফা বাড়িয়েছে তেলের দাম। কোন ঘোষণা ছাড়াই বাড়ানো হয়েছে এই দাম।
গত ২০ মার্চ সরকার ভোজ্য তেলের মূল্য নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সে সময় সরকার এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৬০ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭৬০ টাকা ও প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) খুলনা মহানগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৬৫ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭৯০ টাকা এবং প্রতিকেজি খোলা তেল ১৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
নগরীর বড় বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী ও রেজা এন্ড ব্রাদার্সের মালিক শাহ আলম সর্দার বলেন, সয়াবিন ফলের সংকট নেই। সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এখন তো তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কথা না।
তিনি বলেন, সরকার ভোক্তা পর্যায়ে সরকার ভ্যাট উঠিয়ে নিলে ১৮০ টাকার তেল ১৫৮ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও একদফা তেলের দাম বেড়েছে। মিল মালিকদের কারসাজিতে এই মূল্য বৃদ্ধি। বর্তমানে প্রতি কেজি সয়াবিন তেল ১৭০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। ঈদের আগে তেলের দাম আরও একদফা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী।
ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার গত মাসের ২০ তারিখে তেলের দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তেলের বাজার দরও কিছুটা কমে গিয়েছিল। তাছাড়া খুলনার এক চতুর্থাংশ মানুষকে ন্যায্য মূল্যে সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে তেল দিচ্ছে। তাহলে আবারও অস্থির হয়ে উঠছে কেন তেলের বাজার? এতোদিন সয়াবিন ফলের সংকট দেখিয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছিল তেলের দাম। তাহলে এখন বাড়ছে কেন? এটি তাদের প্রশ্ন।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, তেলে দাম খুলনা থেকে নির্ধারণ করা হয় না, ঢাকা থেকে হয়। দাম কমাতে হলে আগে মিল মালিকদের সাথে আলোচনা করতে হবে সরকারকে। দাম নির্ধারণ করে বাজার তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে সর্ষের ভেতর ভূত থেকে যাবে।
রূপচাঁদা কোম্পানী খুলনার একজন প্রতিনিধি বলেন, তেলের সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তেল যা আসছে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে কম। এক লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও পাঁচ লিটারেরটা চাহিদামত পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির খবর তিনি শুনেছেন। মিল মালিকরা আমাদেরকে তেল না দিয়ে খোলা বাজারের ব্যবসায়ীদের দিচ্ছে বেশী। সেখানে অধিক লাভ পাওয়া যাবে বলে।
রূপসা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী লিটন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি ১৬৫ টাকায় এক লিটার , ৭৯০ টাকায় পাঁচ লিটার ও প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। পাইকারী বাজারে সরকার নির্ধারিত দরের কোন প্রভাব পড়েনি।
খুলনা গেজেট/ এস আই