স্কোরবোর্ডে ৫৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে তখন চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে শ্রীলঙ্কা। আশঙ্কা ছিল দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার। ইনিংসের ১৭ তম ওভারে শরিফুল ইসলামের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে। আরেকটি সফলতা পেতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু এবার বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
নিশ্চিত জীবন পেয়ে পরে দারুণভাবে কাজে লাগালেন কামিন্দু মেন্ডিস। ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এরই মধ্যে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে গড়ে ফেলেছেন দেড়শোর্ধ্ব রানের জুটি। ব্যক্তিগত ফিফটি পূর্ণ করে এখন দৌড়াচ্ছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দিকে। কামিন্দুর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন ডি সিলভাও।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষে কামিন্দু-ডি সিলভা জুটির রান বরাবর ২০০ বলে ১৬০ ছাড়িয়েছে। ১০১ বলে ৮০ রানে অপরাজিত আছেন ডি সিলভা আর ৯৯ বলে ৭৫ করে টিকে আছেন কামিন্দু মেন্ডিস।
বৃষ্টিস্নাত সিলেটের সবুজ উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম সেশনে বলতে গেলে দুমড়েমুচড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ২২ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৯২ রান। টাইগার পেসার খালেদ আহমেদ একাই নেন তিন উইকেট। এ ছাড়া একটি উইকেট পেয়েছেন শরিফুল।
তবে মধ্যাহ্ন বিরতির পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজনের ব্যাটে ভর করে ম্যাচে ফিরেছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে অভিষিক্ত গতিময় পেসার নাহিদ রানা ছিলেন সবচেয়ে খরুচে। ৮ ওভারে খরচ করেছেন ৫৮ রান।
এর আগে বৃষ্টিভেজা সিলেটের মাঠে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তটা দারুণভাবে কাজে লাগান টাইগার পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নিশান মাদুশকাকে ফেরান। তৃতীয় স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ বলে ২ রান করে ফেরেন লঙ্কান এই ওপেনার।
নিশান মাদুশকার উইকেট দ্রুত হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দিচ্ছিলেন দিমুথ করুনারত্নে ও কুশাল মেন্ডিস। ৫৭ বলে ৩৭ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছিলেন তারা। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই আবারও আঘাত হানেন খালেদ। ১২ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দারুণ এক বাউন্সার বুঝে উঠতেই পারেননি কুশাল মেন্ডিস। গালি অঞ্চলে ক্যাচ লুফে নেন জাকির। ফেরার আগে ২ চারে ২৬ বলে ১৬ রান করেন মেন্ডিস। একই ওভারে দিমুথ করুনারত্নেকেও সাজঘরে পাঠান টাইগার এই পেসার। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ঠিকঠাক খেলতে পারেননি লঙ্কান এই ওপেনার। ব্যাটের ফাঁক গলে বল গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে।
টপঅর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, তখন সফরকারীদের চাপ আরও বাড়ায় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ‘দৃষ্টিকটু’ রানআউট। খালেদ আহমেদের করা বল কাভারের দিকে ঠেলে সিঙ্গেলসের জন্য দৌড় দিয়েছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। অন্যপ্রান্তে ম্যাথিউস ধীরলয়ে যতক্ষণে এসে পৌঁছালেন, তার আগেই মিডঅফ থেকে দৌড়ে এসে সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।