যশোরের কেশবপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের ১০ কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চিংড়া বাজারে। তবে উপজেলা বিএনপি ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সংঘর্ষে তাদের কোন কর্মী সমর্থক জড়িত নন। এ ঘটনায় থানায় ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, চিংড়া গ্রামের সন্তান কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ওই এলাকার ছাত্রদলের ছেলেরা বৃহ¯পতিবার যশোরে আনন্দ মিছিলে যোগ দেয়। রাতে তারা চিংড়া বাজারে ফিরে যায়। পরবর্তীতে হঠাৎ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়, কর্মী-সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় চারটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়েছে।
হামলার সময় আওয়ামী লীগ কর্মী হামিদুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করা হয়। হামলায় আওয়ামী লীগ সমর্থক চিংড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৩৭), মফিদুল ইসলাম (৪৫), শহীদ মোড়ল (৩০), সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আবু শাহীনকে (৩৬) পিটিয়ে আহত করা হয়। রাতেই তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মফিদুল ইসলাম বলেন, তাদের ওপর বিএনপি-জামাতের কর্মী সমর্থকরা এক হয়ে অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে দু’পক্ষের কর্মীরা ইট ও বিভিন্ন কাঁচের বোতল ছুড়ে মারায় এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের ছেলেরা যশোর থেকে ফিরে আসার পর অতর্কিতভাবে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীরা এক হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় বেছে বেছে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মারধর করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করা হয়েছে।
চিংড়া বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী রনি পোল্ট্রি ফিডের মালিক হামিদুল ইসলাম শুক্রবার কেশবপুর থানায় ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান বলেন, বৃহ¯পতিবার ছাত্রদলের কিছু ছেলে চিংড়া বাজার থেকে যশোরে মিছিলে গিয়েছিলেন। তারা রাতেই এলাকায় ফিরে গেছেন। সংঘর্ষের বিষয়ে ছাত্রদলের কেউ জড়িত নয়। তাছাড়া এ স¤পর্কে তারা কিছুই জানে না।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাস্টার আমানত আলী বলেন, চিংড়া বাজারে সংঘর্ষে বিএনপির কোন কর্মী-সমর্থক জড়িত নয়। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের দুই নেতার কর্মী-সমর্থকরা ওই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
চিংড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে বাজারে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কেশবপুর থানার ওসি বোরহান উদ্দীন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।