রায়েরমহল কলেজছাত্র তাহমিদ হত্যাকান্ডের দু’দিন পার হলেও পুলিশ এখনও মূল ঘাতক পলাশকে আটক করতে পারেনি। এ ঘটনায় আটক পিয়াল পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সে তথ্যের ভিত্তিতে সামনের দিকে আগাচ্ছে পুলিশ।
তাহমিদ হত্যাকান্ডের পর পাবলা সাহাপাড়া এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন নিহতের মা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মিজানুর রহমান বলেন, হত্যাকান্ডের পরপর কাঠমিস্ত্রি পলাশ সপরিবারে পালিয়ে গেছে। এলাকাবাসি পলাশের সহযোগী পিয়ালকে মৃদু মারধর করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষ খুন করার মতো ঘটনা কখনও ঘটতে পারেনা। আসামি পলাশকে গ্রেপ্তার করতে পারলে সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। পিয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে প্রেরণ করলে সোমবার শুনানির দিন ধার্য কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।
তাহমিদের মৃত্যুর পর সাহাপাড়া এলাকার সেই চাঞ্চল্যতা নেই। তার বন্ধুরা এখন আর আগের মতো সাহাপাড়ার মোড়ে আড্ডা দেয়না। হত্যাকন্ডের পর থেকে ওই এলাকার প্রতিটি মোড়ে মানুষের অবস্থান কম দেখা যাচ্ছে।
কে এই বাটালি পলাশ
এলাকাবাসির দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, পলাশ দৌলতপুর দেয়ানা পূর্ব পাড়া এলাকায় ২০ বছর ধরে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছে। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মোকছেদপুর। তার বাবার নাম আজিজ মোল্লা। তারা ৫ ভাই। পলাশ একসময়ে মিনাক্ষী সিনেমা হলে বাদাম বিক্রির কাজ করত। কিন্তু খুলনায় সিনেমা হলগুলো বন্ধ হওয়ার পর কাঠের কাজ করতে থাকে সে। সন্ত্রাসীদের সাথে তার সম্পৃক্ততা ছিল। ঘটনার দিন জনৈক কামরুল নামে পলাশের এক বন্ধুর উপস্থিতি ছিল। যে কিনা বছর খানেক আগে অস্ত্রসহ বি এল কলেজের সামনে থেকে র্যাবের হাতে আটক হয়। দেয়ানা পূর্ব পাড়া পাখীর মোড়ে জনৈক নুর মোহাম্মদের বাড়িতে স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস করত পলাশ। পলাশের ভাইপো ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে জনতার হতে আটক হয়। তাহমিদকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপানোর সংবাদ পেয়ে স্ত্রী মর্জিনা সন্তানসহ পালিয়ে যায়।
তাহমিদের মায়ের অবস্থা
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন নিহতের মা সুলতানা আফরোজ। স্বাভাবিক হতে পারেনি তিনি। ছেলের ছবি দেখে সময় কাটান তিনি। কারও সাথে কথা বলতে চান না তিনি। কথা বলতে গেলে শুধু দু’চোখ গড়িয়ে পানি পড়তে পড়তে দেখা যায়। দীর্ঘ নি:শ্বাস নিয়ে তাহমিদের কথা বলেন। কথা বলতে বলতে তিনি সন্তানের পূর্বের স্মৃতির কথা তুলে ধরেন। হত্যাকান্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাহমিদ বাবার সাথে তেমন ফ্রি ছিল না। আমার সাথে ফ্রি ছিল। ওকে যে কাঠমিস্ত্রি মারতে পারে সেটা কখনও আমাকে বলেনি। বললে হয়তো আজ এ পরিস্থিতির শিকার হতো না। তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান। সোমবার দৌলতপুর এলাকায় তাহমিদ হত্যার ব্যাপারে মানববন্ধন হবে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ