হাজারো মানুষের ভিড়ে মায়ের মুখ খুঁজে ফিরছে চার মাস বয়সী অবুঝ শিশু মারিয়া সুলতানা। ফ্যাল ফ্যাল করে দেখছে সবার মুখ। মাঝে মাঝে ফুপিয়ে কেঁদে উঠছে। নিষ্পাপ অবুঝ শিশু মারিয়া কী বুঝতে পারছে তার মা-বাবা, ভাই-বোন আর এ পৃথিবীতে নেই! অন্য মুখে সে খুঁজে ফিরছে প্রিয়জনের মুখ। হাজারো মানুষের ভিড়ে মারিয়া আর খুঁজে পাবে না প্রিয় মা-বাবা, ভাই-বোনের কোল। অবুঝ শিশু কে দিবে সান্ত্বনা!
কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে এখন শোকের মাতম। পুরো গ্রামে নেমে এসেছে পাথরের নীরবতা। মোঃ শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ৯ বছরের শিশু ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও ৬ বছরের শিশু কন্যা তাসমিন সুলতানাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার ভোররাতে কোন একসময় সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
ঘাতকরা এসময় ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে ফেলে রেখে যায়। নিহত শাহীনুরের মা শাহিদা খাতুন (৬০) আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। শাহীনুরের তিন ভাইয়ের একভাই আশরাফুল মালয়েশিয়া থাকেন। অপরজন রায়হানুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী। তাদের বোন আছিয়া খাতুন বার বার ডুকরে আহাজারি করছেন আর চিৎকার করে বলছেন, আমার মা ও আরেকটা ভাই এখানে থাকলে, তাদেরকেও খুন করতো সন্ত্রাসীরা।
এদিকে মা-বাবা ও ভাই-বোন হারা ৪ মাস বয়সী অবুঝ শিশু মারিয়া সুলতানার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল। তিনি শিশু মারিয়া সুলতানাকে হেলাতলা ইউপির ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য নাসিমা খাতুনের জিম্মায় রেখেছেন । এখন থেকে তার চিকিৎসা এবং জীবন গড়ার যাবতীয় দায়িত্ব জেলা প্রশাসক গ্রহণ করেছেন বলে ঘটনাস্থলে যেয়ে তিনি ঘোষণা দেন।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, কলারোয়ায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারের জীবিত একমাত্র চার মাসের কন্যাশিশুর দায়িত্ব নিয়ে আপাতত দেখাশোনার জন্য স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের কাছে রাখা হয়েছে। তাকে সাময়িকভাবে দেখভাল করতে অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তীতে অভিভাবকরা দাবি করলে আইনানুগভাবে সমাধান করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম