যশোরের বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদারের প্রত্যাহার সহ ৩ দফা দাবিতে আগামীকাল বুধবার থেকে বেনাপোল স্থল বন্দরে লাগাতার কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি।
মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরের দিকে ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দীন গাজী।
ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির দাবি :
১। বেনাপোল স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ মামুন কবীর তরফদারকে প্রত্যাহার করা।
২। বেনাপোল স্থল বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট সরবরাহসহ দক্ষ চালক নিয়োগ দেওয়া।
৩। বন্দরে পর্যাপ্ত শেড ও জায়গা বৃদ্ধি করে বন্দর এলাকা যানজট মুক্ত রাখা।
এসময় আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। যে বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকেন। কিন্তু বন্দরে পর্যাপ্ত ইক্যুইপমেন্ট না থাকার কারণে, পণ্য লোড, আনলোডের ক্ষেত্রে চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যার ফলে গত ১৬ মে ২০২২ ইং তারিখের মধ্যে বেনাপোল স্থল বন্দরে পর্যাপ্ত ইক্যুইপমেন্ট ব্যবস্থা করা না হলে, ১৭ মে ২০২২ ইং তারিখ হতে বেনাপোল স্থল বন্দরের পণ্য পরিবহন করা হতে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। তার প্রেক্ষিতে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মোঃ মামুন কবীর তরফদার (ট্রাফিক) এর সভাপতিত্বে ইক্যুইপমেন্ট সমস্যা নিরশন সংক্রান্ত সভার স্থানীয় বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার মাধ্যমে গত ৩১/০৫/২০২২ ইং তারিখের মধ্যে বন্দরে ৩ টি নতুন ক্রেন ও ৩ টি নতুন ফর্কলিফটের সরবারহসহ দক্ষ চালক নিয়োগ দেওয়া হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে শর্তে ওই আন্দোলন স্থগিত করা হয়। কিন্তু অদ্যবধি বন্দরে কোন প্রত্যাশিত ইক্যুপমেন্ট সরবারহ করা হয়নি। তার পরেও উক্ত বিষয় সমূহ বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের অবহিত করনের জন্য ০১/০৬/২০২২ ইং তারিখে সভা আহ্বান করতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে পত্র প্রেরন করা হয়। পরে গত ০৫/০৬/২০২২ ইং তারিখে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে আলোচনা সভা আহ্বান করে। উক্ত সভায় পরিচালক (ট্রাফিক) সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে অবহিত করেন। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে কোন তথ্য সরবারহ করেননি। যার প্রেক্ষিতে নিম্নে উল্লেখিত যৌক্তিক দাবী সমূহ আদায়ের লক্ষে আগামীকাল থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ আলোচনার মাধ্যমে আমদানী-রপ্তানীসহ সকল প্রকার পণ্য পরিবহন করা থেকে কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মামুন কবীর তরফদার বন্দরের টেন্ডার সহ বিভিন্ন কার্যক্রমে তার নিজস্ব লোক কিংবা আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিচ্ছেন। তিনি বেনাপোল বন্দরটাকে ধ্বংসের জন্য পায়তারা করছেন। তাকে এ বন্দর থেকে প্রত্যাহার করলে, বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল হওয়া সহ রাজস্ব আদায় আরও বেশি বাড়বে। মামুন কবীর তরফদারের কারণে আজ বেনাপোল বন্দর ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এমন কোন দূর্ণীতি নেই যে, যেখানে মামুন তরফদার জড়িত নয়। সব কাজে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাকে এ বন্দর থেকে প্রত্যাহার করা না হলে, এ বন্দরের উন্নয়ন আর সম্ভব না। তাকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্ম বিরতি লাগাতার চালিয়ে যাবে। বন্দর ব্যবহারকারী সব সংগঠনই আমাদের সাথে আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ৩ দফা দাবি আদায় না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কর্ম বিরতি চলবে।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সমিতির সভাপতি এ.কে.এম. আতিকুজ্জামান (সনি), সহ-সভাপতি-১ ইদ্রিস আলী, সহ- সভাপতি-২ মশিয়ার রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান (সুমন), অর্থ সম্পাদক মুছা করিম (মুছা), দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম (রিপন), কার্যকারী সদস্য-১ রাজু আহম্মেদ, কার্যকারী সদস্য-২ আহসান হাবিব।
খুলনা গেজেট/ এস আই