সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাউনিয়াতে ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিন শ্রমিকের মধ্যে শফিকুল ইসলাম সানা নামের আরো একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার বেলা দেড় টার দিকে প্রতাপনগরের কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাটের অপর পাশে কপোতাক্ষ নদে মরদেহটি ভেসে উঠলে কোর্ষ্ট গার্ডের সদস্যরা সেটি উদ্ধার করে। এ নিয়ে নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
নিহত শ্রমিক মোঃ শফিকুল ইসলাম সানা (৪৮) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের বকচর গ্রামের মৃত ফজলে সানার ছেলে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে কাপসন্ডা গ্রামের মনজিল সরদারের ছেলে বাবর আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বাবর আলী সরদারের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর নিখোঁজ বাকি দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধারে কোষ্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা শুক্রবার সকাল থেকে ফের অভিযান শুরু করে। একপর্যায় বেলা দেড়টার দিকে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাটের অপর পাশে কপোতাক্ষ নদে শফিকুল ইসলামের মরদেহটি ভেসে উঠলে কোর্ষ্ট গার্ডের সদস্যরা সেটি উদ্ধার। তবে, এখনো নিখোঁজ রয়েছে আজিজ নামের একজন।
এদিকে প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহত দুই শ্রমিকের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে।
অপরদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিনে শনিবার সকাল ১০টায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া এলাকায় ঘটনাস্থল যাবেন। সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ বদিউজ্জামানকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি), আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ, প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান।
প্রসঙ্গতঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে কপোতাক্ষ নদের পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কুড়িকাউনিয়া এলাকায় বিশালাকৃতির খাল তৈরি হয়। গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সেনা বাহিনীর তত্তাবধায়নে পাউবো’র নিয়োগকৃত ঠিকাদারের মাধ্যমে ভাঙ্গন পয়েন্ট মেরামতের কাজ চলছে। বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকরা ঠিকাদারের অধীনে এই ভাঙ্গন পয়েন্ট গত আড়াই মাস ধরে কাজ করছে। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় দিকে একটি ট্রলারে করে ১২ জন শ্রমিক বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজে যাওয়ার সময় ভাটার টানে স্রোতের মুখে পড়ে ভাঙ্গন পয়েন্টে ট্রলাটি ডুবে যায়। এসময় ট্রলারটিতে থাকা ১২ জনের মধ্যে নয়জনকে তাৎক্ষনিক উদ্ধার করা সম্ভব হলেও তিনজন নিখোঁজ থাকে। নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে বাবর আলী নামের একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আজ আরো একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু আব্দুল আজিজ নামের আরো এক শ্রমিক এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম