খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের এক পাইলট নিহত
  সোহেল চৌধুরী হত্যা : আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ৩ আসামির যাবজ্জীবন, ৬ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত
  সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আ’লীগের বিপ‌ক্ষে কোনো দ‌লের প্রার্থীই জিত‌তে পারেননি, প্রায় সবার জামানত বাজেয়াপ্ত

গেজেট ডেস্ক

আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। যে ৪টি দল নির্বাচনে জিতেছে আওয়ামী লীগ ওই আসনগুলো তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিলো । এদের কেউ কেউ নৌকা প্রতীক নিয়ে আবার কেউ আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেয় । নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ২৭টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২২টি রাজনৈতিক দল কোনো আসন পায়নি। তাদের প্রায় সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে । এদের মধ্যে তিন কিংস পার্টি তৃণমূল বিএনপি, বিএনএফ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কোনো প্রার্থীই জামানত রক্ষা করতে পারেননি। প্রাপ্ত হিসাবে দেখা গেছে, জাতীয় পার্টির ২৫০ জন প্রার্থীও জামানত হারিয়েছেন। জাপার যে ১১ জন বিজয়ী হয়েছেন তার সবগুলোই আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেয়া আসন । আওয়ামী লীগ করুণা করেনি এমন কোনো আসনে দলটির কোনো প্রার্থী জয়ী হতে পারেনি ।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টি (২৬৫ জন, জাকের পার্টি ২১ জন তৃণমূল বিএনপি ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেস ৯৬ জন, জাসদ ৬৬ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ৭৯ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ৬৩ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ ৪৫ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম ৫৬ জন, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন ৩৮ জন, ইসলামী ঐক্যজোট ৪২ জন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ৩৯ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩৭ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৩০ জন, ওয়ার্কার্স পার্টি ২৬ জন, গণফ্রন্ট ২১ জন, জাতীয় পার্টি-জেপি ১৩ জন, কল্যাণ পার্টি ১৬ জন, খেলাফত আন্দোলন ১১ জন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ ১০ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ৫ জন, গণফোরাম ৯ জন, সাম্যবাদী দল ৪ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ৫ জন, মুসলিম লীগ-বিএমএল ৪ জনকে প্রার্থী দেয়। আওয়ামী লীগ বাদে যে ৪টি দল নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে এরা হলো- জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ ১টি, ওয়ার্কাস পার্টি ১টি এবং কল্যাণ পার্টি ১টি ।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬টি আসনে ছাড় পেয়েছিল জাতীয় পার্টি । এই ২৬ আসনের মধ্যে মাত্র ১১টিতে জিততে পেরেছেন জাপার প্রার্থীরা।

২৬৫টি আসনে দলটির প্রার্থী থাকলেও সমঝোতার বাইরে কোনো প্রার্থী জিততে পারেননি।

উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক, কো–চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জয়ী হয়েছেন। চরম বার্গেনিং করে আওয়ামী লীগ থেকে নেয়া ঢাকার একমাত্র আসনে (ঢাকা-১৮) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের জামানত হারিয়েছেন। তিনি হেরেছেন আওয়ামী লীগের অলিখিত প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে।

২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় ১৪ দলীয় জোট। এই জোটকে আওয়ামী লীগের আদর্শিক জোট হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় । দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ঐক্যের বন্ধনে থাকা ১৪ দলীয় জোটকে ৬টি আসনে নৌকা দেয় আওয়ামী লীগ । অন্যদিকে এদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগই আবার অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী দেয় । প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেন। এর ফলে ৬টি আসনের মধ্যে চারটিতেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে হেরে গেছেন ১৪-দলীয় জোটের শরিকেরা। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা ও জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু হেরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। এরা দীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগকে সহায়তা দিয়ে আসছিলো।

১৪ দলীয় জোটের শরিকদের চাওয়া ছিল ভাগে পাওয়া আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরিয়ে দেওয়া। কিন্তু আওয়ামী লীগ শরিকদের সেই দাবি আমলে নেয়নি। ফলে ভাগে পাওয়া ছয়টি আসনে জেতার বিষয়ে অনেকটাই অনিশ্চয়তায় ছিলেন শরিক দলের প্রার্থীরা। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে হেরে তাদের সেই আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হলো ।

এই নির্বাচনে তিন কিংস পার্টির আর্বিভাব ঘটেছিলো। এদের মধ্য বিএনএফ অন্য জোটগুলোকে সাথে নিয়ে সরকার গঠনের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলো। আর তৃণমূল বিএনপি সংসদের প্রধান বিরোধীদল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলো। এই দুটি দলের সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে । এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন মাত্র তিন হাজার ১৯০ ভোট । আর চেয়ারম্যন শমসের মোবিন পেয়েছেন ১০ হাজার ভোট । অপর কিংস পার্টি সুপ্রিম পার্টিরও সব প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন । পার্টির চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৩৮ ভোট।

আন্দোলনের কাফেলা ছেড়ে নির্বাচনে যোগ দিয়েছিলো কল্যাণ পার্টি। তাদের চেয়ারম্যান ছাড়া সব প্রার্থীও জামানত খুইয়েছেন। দলটি চেয়ারম্যান জেনারেল( অব.) মুহাম্মদ ইব্রাহিম আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে অংশ নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। তার পক্ষে বিশেষ সংস্থা কাজ করেছে বলে ইসিতে অভিযোগ দাখিল হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!