খুলনার আদালত চত্বরে নির্যাতিত নারীকে বিয়ে করলেন ধর্ষক। বিয়ের পর ধর্ষণের দায় থেকে আসামিকে মুক্তি দেয় আদালত। সোমবার খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ এর বিচারক আ: ছালাম খানের উপস্থিতিতে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ সময়ে ধর্ষিত নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তানের স্বীকৃতি দেন ওই আসামি।
আদালত সূত্র জানায়, নির্যাতিত ওই নারী স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন। তার ২ টি সন্তানও রয়েছে। বড় সন্তান তার আগের স্বামীর বাড়িতে ছিল। ছোট সন্তানটি তার সাথে থাকত।
ওই নারী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আগের স্বামী তাকে ছেড়ে দিলে বাবার বাড়িতে চলে আসেন তিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি গৃহপরিচারিকার কাজ নেন। ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট জনৈক রাজুর সাথে তার পরিচয় হয়। পরে তারা গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
রাজু ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। ছোট সন্তানকে নিয়ে লবনচরা থানাধীন প্রত্যাশা আবাসিক এলাকার জনৈক মো: আব্দুল গফ্ফারের বাড়িতে স্বামী স্ত্রীর পরিচয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন। আসামি তার এবং সন্তানের ভরণপোষণ ও বাড়ি ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করত। রাজু একাধিকবার ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের একপর্যায়ে তিনি সন্তান সম্ভাব্য হয়ে পড়েন। বিষয়টি রাজুকে অবহিত এবং বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। রাজু ভুক্তভোগী ওই নারীর কথায় কোন কর্ণপাত না করেই সম্ভাব্য বাচ্চাকে নষ্ট করে ফেলার জন্য চাপ দিতে থাকে।
পরবর্তীতে প্রতিবেশীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন চতুর রাজু তাকে না জনিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছে। এটা জনার পর একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হন তিনি। ২০২১ সালের ১৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে রাজু ফোন করে তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলার জন্য হুমকি দেয়।
পরবর্তীতে ওই নারী খুলনার লবনচরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজুকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি ফরিদ আহমেদ বলেন, আসামি রাজু গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে আছে। এর আগের কার্যদিবসে আসামি রাজু আদালতকে ওই ধর্ষিত নারীকে বিয়ে করা ও তার সন্তানের ভরণপোষণ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। আদালত সোমবার (১৩ মার্চ) বিয়ের জন্য দিন ধার্য করেন। সকালে আদালত চত্বরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে কাজী ডেকে এনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করেন। আদালত রাজুকে নির্যাতিত নারীর অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড