খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

অস্ত্র-গুলি উদ্ধার : প্রতারক চক্রের প্রধান বাদশা মিয়া সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার শীর্ষ প্রতারক এসএম বাদশা মিয়াকে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের বাইপাস সড়ক এলাকার জনৈক শফিকুল ইসলামের মুদি দোকানের পাশ থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে দোকানের ভিতর থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।

আটক প্রতারক এসএম বাদশা মিয়া সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার হাতুড়ে ডাক্তার নূর ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবের নোট প্যাড, সীল, সংসদ সদস্যের ডিও লেটার ও বিভিন্ন প্রকার নিয়োগপত্র এবং জমিজমা সংক্রান্ত কাগজ-পত্র জালিয়াতি করে মানুষের সাথে প্রতারণার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

প্রতারক বাদশা মিয়াকে আটকের পর সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান শনিবার দুপুরে তার সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের প্রধান বাদশা মিয়ার কোন বৈধ পেশা নেই। প্রতারণা করে মানুষের নিকট থেকে অর্থ আদায় করা তার মূল ব্যবসা ও পেশা।

তিনি কোন ডাক্তার না হয়েও নিজেকে ডাঃ এসএম বাদশা মিয়া, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পি.এস, প্রধানমন্ত্রীর মামলা পরিচালনাকারী, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর পরিচয় দিতেন। ক্ষমতাশীন আ’লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা, বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপিদের পরিচয় দিয়ে তাদের সিল, প্যাড, ডিও লেটার, বাণী ইত্যাদি ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে চাকুরী পাইয়ে দেয়া, চাকুরীতে পদোন্নতি, চাকুরীর বদলী, মামলার রায় পাইয়ে দেয়া, জমিজমা উদ্ধার ও দখল ইত্যাদির প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই মহা প্রতারক। এ সকল কাজের জন্য তিনি দেশী ও বিদেশী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, এমপিসহ অনেকের ছবি সংগ্রহ করে তাদের ছবির সাথে নিজের ছবি লাগিয়ে (এডিট করে) নিরীহ মানুষের নিকট নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রভাবশালী হিসেবে উপস্থাপন করে থাকেন।

একইসাথে সরকারের প্রভাবশালী আমলা, প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট মিথ্যা পরিচয়ে তদবীর করে থাকেন এবং তদবীর না শুনলে বদলী বা চাকুরীচ্যুত করার হুমকি ধামকি দিয়ে থাকেন। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিচয় দিয়ে দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় কমিটি গঠন করে তাদের নিকট থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন জনৈক শফির মুদি দোকানের সামনে থেকে প্রতারক বাদশা মিয়াকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড তাজা গুলি, ৩ টি জাল সীল। (সিল গুলো যাদের তারা হলেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এম.পি, এসএম বাদশা মিয়া, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ডাঃ মোস্তফা জামান, সাধারন সম্পাদক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার কেন্দীয় কমিটি।) পুলিশ প্রধানের কাছে লেখা খুলনা-২ আসনের এমপি শেখ সালাউদ্দীন জুয়েলের একটি ডিও লেটার, প্রধান মন্ত্রীর একান্ত সচিবের অফিসিয়াল নোট প্যাড একটি, মানবাধিকার প্রতিদিন প্রত্রিকার স্টিকার একটি, ভুয়া ওয়ারেন্ট ২৫টি, মসজিদের চাঁদা আদায়ের রশিদ বই ২০টি, আদায়কৃত চাঁদার ৬৮ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন আলামত।

প্রেসব্রিফিং-এ তিনি আরো জানান, এ সময় তার সহযোগী সাগর নামের আরো এক জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলাসহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, অস্ত্রসহ আটক প্রতারক বাদশার মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!