খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ

অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা

শাহিন হোসেন, অভয়নগর

যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অবশ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ পেলেই নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। নদী বন্দর ঘেরা মানুষের একমাত্র চিকিৎসার ভরসাস্থল অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাধীনতার আগে নির্মাণ করা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন জরাজীর্ণ। ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফেটে গেছে মূল ভবনের দেয়াল এবং পিলার। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে চলছে চার উপজেলার প্রায় ৫ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা।

হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে নেই জানালা। শীতের সময় ঠান্ডা বাতাস ঢুকে সাধারণ রোগীরা আরও অসুস্থ হয় পড়ে। অন্য দিকে ঝড় বাতাস শুরু হলে রোগীদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। তখন বেড পরির্বতন করে অন্য বেডে রাখা হয় রোগীদের । প্রথমে ১০ বিশিষ্ট শয্যা থেকে হাসপাতাল থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও হাসপাতালটি সমস্যার কোনো অন্ত নেই। বাড়েনি সেবার মান। ছাদের একাধিক স্থানে পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষার মৌসুমে ছাদ থেকে পানি পড়ে জং ধরেছে রডে। একই অবস্থা ওই ভবনের আরও ২০ থেকে ২৫টি স্থানে। দ্রুত ভবনটি সংস্কার অথবা নতুন ভবনে জরুরি বিভাগ ও আবাসিক ওয়ার্ড স্থাপন করার দাবি রোগী ও চিকিৎসকদের।

রোগী ও স্বজনরা জানায়, তাদের অসুস্থতা সারাতে হাসপাতালে এসে বরং প্রতিমূহুর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে হয়। লাখ লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসালয় দ্রুত সংস্কারের দাবি রোগী ও সাধারণ সেবা নিতে আসা মানুষের।

সূত্র জানায়, ঝুকিপুর্ণ ভবনে গাদাগাদি করে কোন রকমে চলছে চিকিৎসা সেবা। পুরাতন ভবনের সিলিং খসে খসে পড়লেও নেই কারো কোন মাথাব্যাথা। তাছাড়ও এরই মধ্যে রোগীর মাথায় সিলিং খসে পড়ে ঘটেছে আহত হওয়ার মত ঘটনা। এ অবস্থায় ঝুঁকিপুর্ণ ভবনে রোগীরা দিন কাটাচ্ছে চরম আতঙ্কে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রবেশদ্বারের সিলিং এ বড় ধরণের ফাটল, ইতিমধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে বড় একটি অংশ। তাছাড়া দ্বিতীয় তলার সিড়ি সংলগ্ন, পুরুষ, মহিলা ওয়ার্ড ও স্টাফ রুমের সিলিং প্রতিদিন খসে খসে পড়ছে। সবচেয়ে ঝুকিপুর্ন নারী ও শিশু ওয়ার্ডের সিলিং এর অবস্থা। উপরে ভাঙ্গাচোরা ছাদ নিচে নারী শিশুদেরকে রেখে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। যদিও কর্তৃপক্ষ সতর্কতা অবলম্বনে কয়েকটি সিট খালি রেখেছেন।

পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি তালতলা এলাকার আয়নাল জমাদ্দার জানান, দুপুরে ভাত খাওয়ার সময় হঠাৎ উপর থেকে বড় একটি ভাঙ্গা টুকরা প্লেটের উপর খসে পড়েছে। অল্পের জন্য বড় দূর্ঘটনা ঘটেনি।

মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রাশিদা বেগম জানান, সেদিন রাতে মাথার উপরে সিলিং খসে পড়েছে ফলে গুরুতর আহত হয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স জানান, স্টাফ রুমের সিলিং ভেঙ্গে আমি নিজে সেদিন আহত হয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে যেকোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, মাত্র ৫০ বেডে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়। এ অবস্থায় ৫০ বেডের এই হাসপাতালের বেড বাড়ানোর জোর দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল। সাগর নামে একজন রোগী জানান, হাসপাতালে বেড না পেয়ে গত ২দিন ধরে ফ্লোরে রয়েছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলিমুর রাজিব বলেন, হাসপাতালে সবসময় ১০০ এর কাছাকাছি রোগী ভর্তি থাকে। ফলে সবাইকে সব সময় সিট দেওয়া সম্ভব হয় না। ভবনের বেহাল দশা রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কোন মতে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

হাসপাতালের বেহাল দশার বিষয়ে জানতে চাইলে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, পুরাতন ভবনের বেহাল দশার বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি। সু-দৃষ্টি দিলে সব সমস্যার সমাধান হবে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!