দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড, এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েও বাড়ি ফিরে গেলেন পারভিন। তবে বাড়ি গিয়ে তাকে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা ১০টি বই পড়তে হবে।
সোমবার সাতটি শর্তে বাড়িতে কারাভোগের আদেশ দিয়েছেন যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদলতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস। সাজাপ্রাপ্ত পারভীন শহরের আশ্রম রোডের গাড়োয়ানপট্টির মৃত ওহাব মুন্সির মেয়ে।
শর্তগুলো হলো, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, নীলিমা ইব্রাহিমের আমি বীরঙ্গনা বলছি, মালেকা বেগমের মুক্তিযদ্ধে নারী, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আনিসুল হকের মা, জহির রায়হানের আরেক ফাগুন, একুশের গল্প, সেলিনা হোসেনের নিরন্তর ঘন্টাধনি ও যাপিত জীবন, শতকত ওসমানের আর্তনাদ ও সৈয়দ সামসুল হকের আরো একজন বই পড়তে হবে।
একইসাথে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সাথে জড়ানো যাবে না। সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন এবং সকলের সাথে সদাচারণ করিবেন। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে কখনো তলব করিলে শাস্তি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যথাস্থানে হাজির হবেন। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সাথে মেলামেশা বা চলাফেরা করতে পারবেন না। আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্বাবধানে থেকে নিজের বাস স্থান ও জীবন ধারণের উপায় সম্পর্কে অবহিত করিবেন। এই সময়কালীন প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ব্যতিত নিদিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।
আদেশে প্রবেশনের কোন শর্ত ভঙ্গ করলে, প্রবেশন চলাকালিন যে কোন সময় আদালত কৃর্তক সিদ্ধান্ত বাতিল হবে এবং কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে কারাগারে অন্তরীন থাকতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের সরকারি কৌশলী (এপিপি) আইয়ুব খান বাবুল।
২০০৬ সালের ১৫ জুন আসামি পারভীনকে আটক ও তার কাছ থেকে ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করে পুলিশ। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি যথারীতি হাজিরা দিয়েছেন পারভীন। এ মামলা ছাড়া তার আর কোন মামলাও নেই। দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রানিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুর্নবাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারক।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি