সাতক্ষীরায় হঠাৎ করে গরুর খুরা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। খুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে গত চার সপ্তাহের ব্যবধানে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় অন্তত ১৬টি গরু মারা গেছে। ভ্যাকসিন দিয়েও কমানো যাচ্ছে না এ রোগের প্রকোপ। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ না করায় তা কোন কাজে আসছে না বলে অভিযোগ খামারীদের। যদিও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর বলছে, ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। সমস্যা ভ্যাকসিন প্রয়োগের সময়কাল ও নিয়ম নিয়ে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের খামারী নিরঞ্জন ঘোষ ছোট্টু জানান, তার খামারে উন্নত জাতের গাভী বাছুরসহ মোট ১৫টি গরু ছিল। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে খামারে খুরা রোগের সংক্রমণ হয়। এতে একে একে এ পর্যন্ত তার খামারের পাঁচটি গরু মারা গেছে। ঠিক একইভাবে নিরঞ্জন ঘোষ ছোট্টুর প্রতিবেশী বাবু রাম বিশ্বাসের পাঁচটি গরুর মধ্যে খুরা রোগে একটি, নিতাই ঘোষের সাতটি গরুর মধ্যে দুইটি, গৌর ঘোষের ৮টি গরুর মধ্যে ২টি ও ফারুক মোাল্লার ৮০টি গরুর মধ্যে ছয়টি গরু মারা গেছে। এছাড়া রাম বিশ্বাসের চারটি গরু খুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
স্থানীয় খামারীরা জানান, মারা যাওয়া উন্নত জাতের প্রতিটি গাভীর মূল্য দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন দিয়েও কোনো কাজে আসেনি। ক্ষুরা রোগের কারনে এভাবে খামারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ভ্যাকসিন সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করার কারণে ভ্যাকসিন সঠিকভাবে কাজ করছে না বলে মনে হয়।
এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। তবে, ভ্যাকসিন দেওয়ার সময় নিয়ে খামারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। তারা মনে করে একবার ভ্যাকসিন দিলে হয়ে যায়। খুরা রোগের ভ্যাকসিন একবার দিলে ছয় মাস কাজ করে। এই ভ্যাকসিন ছয়মাসের মধ্যে আবার দিতে হয়। তাহলে বুস্ট ডোজ হিসেবে কাজ করে। কিন্তু ছয় মাস পার হয়ে গেলে এর কার্যকারিতা কমে যায়। খামারীরা প্রথম ডোজ দিয়ে আর আসে না। যে কারনে সমস্য হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের দপ্তরে জানালে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেই। কিন্তু আমাদের কেউ কিছু জানায়নি।
খুলনা গেজেট/ টি আই