সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টার রেকর্ড ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৫৪ শতাংশ। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় এক দিনে এই বিপুল সংখ্যক ব্যক্তির করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।
জেলায় মঙ্গলবার (১জুন) ৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গিয়েছিল। করোনা শনাক্তের দিক দিয়ে সাতক্ষীরা এখন করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে। ঈদ পরবর্তী সংক্রমণ বাড়ার যে শঙ্কা ছিল, সেটিই এখন সত্যি হতে চলেছে।
এদিকে ভারতীয় ভেরিয়েন্টে (ধরণ) জেলাবাসী আতঙ্কিত থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ভারত ফেরত ৩৩৭ জনের মধ্যে ১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হলেও এখনও কারোর শরীরে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়নি।
জেলাব্যাপি হঠাৎ করোনা আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় এবং ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন ও ঈদের সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসার কারণে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে সিভিল সার্জন ডাঃ হোসাইন সাফায়েত জানান, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কোন আই সি ইউ নেই। যে কারনে করোনা রোগী নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ভুক্তভোগীরা। তবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে ৮টি আইসিইউ আছে।
এসব আইসিইউতে নিজস্ব আক্সিজেন ব্যবস্থাসহ সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন এপ্রিলের চেয়ে মে মাসে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত ফেরত ৩৩৭ জনের মধ্যে ১১জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হলেও তাদের শরীরের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরণ) আছে কিনা জানা যায়নি।তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইআইডিআর পাঠানো হলেও তাদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো বলেন, এপর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ২৫৫জন ব্যক্তি। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪৫ জন ও করোনা উপসর্গে মারা গেছে ২১০জন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় ৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে জেলা সার্বাধিক ৫০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বুধবার (২জুন) পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ৬০২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৪৬ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ২১০জন। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৮ জন ও সদর হাসপাতালে ৭জন করোনা রোগী ভর্তি আছে। এছাড়া প্রাইভেট হাসপাতালেও করোনা রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। বর্তমানে আইসিইউতে ভর্তি আছে ৪ জন।
জেলা প্রশাসক জানান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একটি করোনা ইউনিট গড়ে তোলা হচ্ছে। একইসাথে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এরই মধ্যে একটি করোনা ইউনিট স্থাপন করে তার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল সিবি হাসপাতাল, বুশরা, ন্যাশনাল হাসপাতাল এবং ইসলামী হাসপাতালে অনেক করোনা রোগী রয়েছে। তাদের সাথে যাতে সাধারণ রোগীদের সংযোগ না থাকে সে বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য জেলার সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই