ইউটিউব থেকে আপেল কুল চাষের ভিডিও দেখে কুল চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান ও একই সাথে স্বাবলম্বী হয়েছেন আজিজুল ইসলাম নামে এক শিক্ষিত বেকার যুবক। আজিজুল ইসলাম লোহাগড়া উপজেলার রাজুপুর গ্রামের মোঃ ওলিয়ার খালাসীর ছেলে।
মোঃ আজজিুল ইসলাম জানান, যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরির চেষ্টা করেও যখন চাকরি পাচ্ছি না, তখন চাকরি না পেয়ে চিন্তা করলাম নিজের কিছু একটা করতে হবে। তখন ইউটিউব থেকে কুল চাষের ভিডিও প্রতিবেদন দেখে ২০১৬ সালে কিছু পোষা পায়রা বিক্রি করে যশোর ঝুমঝুমপুর থেকে একশ বাউকুলের চারা এনে প্রতি পিচ প্রকার ভেদে ২০-৪০ টাকা দরে কিনে এনে ১৮ শতাংশ জমিতে চারা রোপন করি। সঠিক পরিচর্যায় ভালো ফলন হওয়ায় প্রতি বছর জমির পরিমান বাড়িয়ে এখন উৎপাদিত কুল বাজারজাত করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছি।
বর্তমানে তার কুলবাগানে বলসুন্দরী, থাই আপেলকুল, টকমিষ্টি বাউকুল জাতের প্রায় ৭শ চারা রোপন করেছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কুলের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তার বাগানে উৎপাদিত আপেল কুল, অষ্টেলিয়ান বলসুন্দরী,থাইকুল সুস্বাদু আর মিষ্টি হওয়ায় এলাকায় যেমন চাহিদা রয়েছে তেমনি এই কুল চাষ করে এলাকার অনেকের কাছে তিনি ‘মডেল’ হয়ে গেছেন। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি কুল ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত এসব কুলের স্বাদ যেমন ভালো, তেমন চাহিদাও বেশী। আজিজুলের কুল চাষের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এই আপেল কুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। প্রতিদিন বেকার যুবকরা এসে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
আজিজুল ইসলাম বলেন, ১২০ শতক জমিতে বল সুন্দরী, থাই আপেল, টকমিষ্টি কুল জাতের চারা লাগিয়েছি, এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছে প্রায় ২০ কেজি করে কুল ধরেছে। বাজারে চাহিদার পাশাপাশি দামও ভালো। আশা করছি এ বছর সব খরচ-খরচা বাদ দিয়ে ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকা লাভ হবে। তিনি কুল চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির পায়রা, হাঁস মুরগী পালন করে আজ তিনি স্বাবলম্বী। তিনি বেকার যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, চাকরির পিছনে না ঘুরে সঠিক গাইড লাইন নিয়ে কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার বলেন, লোহাগড়া উপজেলায় বাানজ্যিক ভাবে কুল চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ উপজেলায় কুলচাষীরা বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করে থাকে। কুলচাষে কুলের পোকা-মাকড়ের আক্রমন কম হয়, কুল চাষের পরপরই যদি তাদের শাখা গুলো কেটে দেওয়া যায়, পরবর্তী সময় নতুন শাখায় যে কুল আসে সেখানে রোগ ও পোকা মাকড়ের আক্রমন কম হয় এবং ফলন ভালো হয়। কৃষি অফিস থেকে কুলচাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ বিএমএস