মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে তিন বছরে সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সোনা ও ডলার পাচারের অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছে সিআইডি পুলিশ। শুক্রবার সিআইডি পুলিশ ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের এসআই মেহেদী হাসান মামলাটি করেন।
আসামিরা হলেন, যশোরের শার্শা উপজেলার পুটখালী গ্রামের বুদো সরদারের দুই ছেলে আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারি নাসির উদ্দিন ও ওলিয়ার রহমান, সাহেব আলীর ছেলে রমজান আলী, দুর্গাপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, পুটখালী গ্রামের পূর্বপাড়ার আতিয়ার রহমানের ছেলে নাজমুল ইসলাম, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার নলচক গ্রামের আব্দুল সাত্তারের দুই ছেলে রুহুল আমিন ও রেজাউল করীম, নৈয়াইর গ্রামের সিরাজ বেপারীর ছেলে শাহজালাল, চাঁদপুরের মতলব উপজেলার খাগুরিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়াজির ছেলে আরিফ মিয়াজি, মাদারীপুর সদর উপজেলার বলসা গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে আবুল হায়াত জনি এবং নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজি গ্রামের আলিউল্লাহ বেপারীর ছেলে রবিউল আলম রাব্বি।
সিআইডি পুলিশ ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের এসআই মেহেদী হাসান মামলায় উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০২২ সালে জুন মাসে যশোর কোতোয়ালি থানার একটি সোনা চোরাচালান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্তকালে বিভিন্ন সোর্স, পত্রপত্রিকার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানতে পারেন আসামিরা আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারিদলের সক্রিয় সদস্য। আরব আমিরাতের দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করে তারা সোনা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিমান বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশে এনে ভারতে পাচার করে। পাশাপাশি ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে ডলার নিয়ে আসে।
আসামিরা বেনাপোলের পুটখালীর গরুর খাটালের ব্যবসা এবং বিভিন্ন জায়গায় জুয়েলারি ব্যবসার নামে সোনা পাচার ও ডলার নিয়ে আসে। তারা ভারতের গৌতমের কাছে সোনা পাচার করে থাকে। স্থল বন্দর ও ‘বাগান’ পোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে সোনা ভারতে পাচার করে থাকে। একই পথ দিয়ে বিপুল অঙ্কের ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রা ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।
তিনি যশোরের বিভিন্ন সূত্র থেকে এই ১১ জনের নাম পেয়েছেন, যারা এই চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।
আসামিরা ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার টাকার সোনা ও ডলার ভারতে পাচার করেছে। তারা বিভিন্নস্থানে নামে বেনামে এবং ছদ্মনামে বিচরণ করেন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে সিআইডি পুলিশ সদর দফতরের অনুমতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)৪(২) ধারায় এ মামলাটি করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি সিইআইডি তদন্ত করবে।
খুলনা গেজেট/এসজেড