যশোর শহরতলীর আরবপুর মাঠপাড়ার গৃহবধূ শিরিনা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে ঘাতক স্বামী জুয়েল সরদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (২৪ মে) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এ কারাদণ্ড দিয়েছেন। জুয়েল সরদার শহরের আরবপুর মাঠপাড়ার মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ পিপি সেতারা খাতুন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জুয়েল সরদার শহরের খয়েরতলার ভৈরব ফিলিং স্টেশনে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। জুয়েলের প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর পরিবারিকভাবে শিরিনা বেগমকে তিনি বিয়ে করেন। প্রথম পক্ষের দুই সন্তান ও শিরিনার নিজের সন্তানের দেখাশুনা নিয়ে প্রায়ই তার স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হতো। ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর দুপুরে জুয়েল বাড়ি আসলে ছেলে মেয়েদের নিয়ে শিরিনা বেগমের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে শিরিনাকে মারপিট করে ঘরে মধ্যে ফেলে দিয়ে পানির বোতলে রাখা পেট্রোল তার গায়ে ঢেলে দিয়ে জুয়েল আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রতিবেশিরা ঘরের মধ্যে থেকে ধোয়া বের হতে দেখে ঘরে ঢুকে দেখে শিরিনার গায়ে আগুন জ্বলছে। এসময় দ্রুত পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে শিরিনাকে উদ্ধার করে প্রতিবেশিরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শিরিনাকে প্রথমে যশোর হাসপাতালে ও পরে খুলনায় এবং রাতে ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ১৪ অক্টোবর নিহতের পিতা ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমখোলা গ্রামের খলিলুর রহমান বাদী হয়ে জামাই জুয়েলকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় জুয়েল সরদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুরতান কসবা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রেজাউল করিম।
এ মামলার সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি জুয়েল সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনায়ে আরও ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি