গর্ভে জীবিত থাকা সন্তান মৃত বলে চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে যশোরের অসীম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তিন ডাক্তারের বিরুদ্ধে।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন, অসীম ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিলুফার ইয়াসমিন এমিলি, ডাক্তার আবু সাঈদ (রেডিওলজিস্ট অ্যান্ড ইমাজিং) ও ডাক্তার একেএম আব্দুল আওয়াল (কনসালটেন্ট ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি)।
ভুক্তভোগী নারীর ভাই শেখ শাওন মাহমুদ বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার পাঠান পাইকপাড়া গ্রামের শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, তার বোন শেখ নাজমুন নাহার সুমি ও সুমির স্বামী বাঘারপাড়া উপজেলার খলসি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম নি:সন্তান দম্পতি। এ বিষয়ে চিকিৎসা নিতে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর অসীম ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিলুফার ইয়াসমিন এমিলির কাছে যান। ডাক্তার এমিলি তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসাপত্র দেন। ১৭ মার্চ ডাক্তার এমিলি জানান, সুমির গর্ভে সন্তান এসেছে। ডেলিভারির তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১১ নভেম্বর।
এরমধ্যে গত ২৯ মার্চ সুমির সামান্য রক্তক্ষরণ হলে দ্রুত ডাক্তার এমিলির কাছে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেন ডাক্তার। পরামর্শ অনুযায়ী ডাক্তার আবু সাঈদের কাছে আলট্রাসনোগ্রাম ও ডাক্তার একেএম আব্দুল আওয়ালের কাছে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করান সুমি। তারা দু’জনেই রিপোর্টে উল্লেখ করেন গর্ভের সন্তান মারা গেছে। এরপর ডাক্তার এমিলি এসব রিপোর্ট দেখে কোনো চিন্তাভাবনা না করেই এবং অন্য চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা না নিয়ে সুমিকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন।
এরপর ১ এপ্রিল অসীম ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সুমির গর্ভপাত ঘটানোর জন্য পর্যায়ক্রমে তিনদিন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এরমধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সুমি। তার জরায়ুর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ৩ এপ্রিল স্বজনেরা সুমিকে সেখান থেকে কুইন্স হসপিটালে নিয়ে যান।
সেখানে তাকে আরেক গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখানো হয়। তাকে কুইন্সে ফের আল্ট্রাসনোগ্রামসহ অন্যান্য টেস্ট করানো হলে ডাক্তার জানান, গর্ভের সন্তান সুস্থ আছে। কিন্তু মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন। এখন প্রতিদিনই সুমির পেছনে পরিবারের পাঁচ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যা তার পরিবারের পক্ষ থেকে বহন করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
বাদী দাবি করেন, অসীম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার এমিলি, আবু সাইদ ও আব্দুল আওয়াল গর্ভের ওই সন্তানকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভুল চিকিৎসা দিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করছিলেন। যা ডাক্তারি পেশার নীতি পরিপন্থী।