আলোচনা ছাড়াই যশোরে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি। শহর ও শহরতলির ৬২ রুটের নতুন ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দিয়েছেন। এতে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী সকল রুটে যাত্রীপ্রতি পাঁচ টাকা ভাড়া বৃদ্ধির করা হয়। যা আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হয়।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাবে যশোরসহ সারাদেশেই জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে স্বল্প আয়ে তাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। যশোর অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির অধীনে ১২ হাজার ইজিবাইক রয়েছে। যার সাথে কমপক্ষে ৫০ হাজার পরিবার জড়িত। ইজিবাইক চালিয়ে তাদের সংসার চলে। সারাদিন যে আয় হয় তার অর্ধেকের বেশি চলে যায় গাড়ি মালিকের কাছে। এ জন্য বাধ্য হয়ে বাঁচার তাগিদে সংগঠনটি ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু বলেন, ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কিছু জানেনা। অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি চাইলেই এভাবে ঘোষণা দিয়ে ভাড়া বৃদ্ধি করতে পারে না। কারণ ইজিবাইক ও রিকশার অনুমোদন দেয় পৌরসভা। ভাড়া নির্ধারণ করাও পৌরসভার কাজ। পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেই ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু এ কাজ করা হয়নি। ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব সংবলিত একটি আবেদন অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি পৌরসভায় জমা দিয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শামীমুজ্জামান শামীম বলেন, গত ৩০ জুন পৌর কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রমিক ও মালিক সংগঠনকে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব সংক্রান্ত স্মারকলিপি দেয়া হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না জানালেও তাদের দাবির বিরোধিতা করেনি। তাই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে, ভাড়া বৃদ্ধির সংবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করে যাত্রীরা বলছেন, কয়েকদিন পরপর কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। অথচ মানুষের আয় বাড়ছে না। সবকিছু আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মূল্য বৃদ্ধির জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে দিশেহারা হতে হচ্ছে অসহায় জনগণকে। ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন সেক্টর সাধারণ মানুষকে পিষে খাচ্ছে। তাদের এ ঘোষণায় সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ইচ্ছামত এ ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা বন্ধের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ দাবি করেছে।
খুলনা গেজেট/এসজেড