দ্বিতীয় দফায় ময়ূর নদ খনন কাজ চলছে গত একবছর ধরে। দখলদারদের উচ্ছেদ না করেই খনন এবং খাল ও ড্রেনের সংযোগমুখে বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থা না রাখায় খননের সুফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশক কর্মীরা।
এর মধ্যেই নদের কচুরি ও বর্জ্য অপসারণ এবং স্থায়ী খননের জন্য ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি মাল্টি ফাংশনাল ড্রেজার (বহুমুখী কাজে ব্যবহৃত খনন যন্ত্র) এবং ৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা দিয়ে আরেকটি ভাসমান লং ভুম স্কেভেটর (লম্বা ভাসমান ভেকু) কিনেছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। গত মঙ্গলবার ভাসমান ভেকুটি পরীক্ষামূলকভাবে নদে নামানো হয়। আর মাল্টি ড্রেজার নামানো হয়েছে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় আবারও নদটি খনন হচ্ছে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে আড়াই কিলোমিটার খনন সম্পন্ন হয়েছে।
এমন অবস্থায় ময়ূর নদের কচুরি অপসারণ, পেড়িমাটি উত্তোলন, খনন এবং খনন করা মাটি দূরে ফেলার জন্য মাল্টি ফাংশনাল ড্রেজার কিনেছে কেসিসি। ফিনল্যান্ডের ওয়াটার মাস্টার কোম্পানির তৈরি যন্ত্রটি চলতি মাসে খুলনায় এসেছে পৌঁছায়। গত ২৫ ফেব্রয়ারি এটি পরীক্ষামূলকভাবে ময়ূর নদে নামানো হয়। ভানসমান লং বুম স্বেভেটর আনা হয়েছে কোরিয়ার ই জেড কোম্পানি থেকে। এটিও চলতি মাসে দেশে পৌঁছায়। মঙ্গলবার এটি পরীক্ষামূলকভাবে নদে নামানো হয়।
কেসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আবদুল আজিজ বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস ধরে কেসিসির কর্মীদের যন্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিন নদে কিভাবে চালাতে হয় তার প্রশিক্ষণ চলছে। নদ খননের কাজ শেষ হলে কেসিসি নিয়মিত কচুরি অপসারণ এবং নদ খনন করবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ইচ্ছে মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে ময়ূর নদের প্রাণ ফেরাতে মাস্টার প্লান তৈরি করে এরপর কাজ করা প্রয়োজন। এছাড়া খালের মুখে শোধন কেন্দ্র, স্থায়ীভাবে দখল মুক্ত করতে নদের পাড় উচু করে বাধাঁই এবং নদের প্রাণ ফেরাতে প্রাকৃতিক জোয়ারভাটা চালুর প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে-তাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে।
কেসিসির জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক শেখ মো. মাসুদ করিম বলেন, কেসিসির যন্ত্র নিয়ে পুরো নদ খনন কষ্টসাধ্য ও ব্যয় সাপেক্ষ বিষয়। সরকারি উন্নয়ন কাজ পরিচালনার জন্য যে প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট রয়েছে, তা এতো টাকা নিজস্ব উদ্যোগে ব্যয়ের অনুমোদন দেবে না। খনন পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যন্ত্র দুটি কেনা হয়েছে।
তিনি বলেন, নদ খনন একটি ধারাবাহিক কার্যক্রম। এজন্য খনন কাজ শেষ হওয়ার আগেই নতুন যন্ত্র কেনা হয়েছে, যাতে খননের পর নিয়মিত নদ থেকে কচুরি ও ভাসমান বর্জ্য অপসারণ এবং যে সব স্থান ভরাট হয়ে যাবে সেই সব স্থান খনন করা যায়।
খুলনা গেজেট/এইচ