দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও সংকট নিরসনে ভারত থেকে এক সপ্তাহে আমদানি করা হলো ১৪শ’ ৩ মেট্রিক টন ছোলা। এর মধ্যে টিসিবির আওতায় নিন্ম আয়ের মানুষদের জন্য সরকারি পর্যায়ে ৪০০ মেট্রিক টন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৩ মেট্রিক টন কাঁচা ছোলা আমদানি করা হয়েছে। টিসিবির আওতায় থাকা নিন্ম আয়ের মানুষদের ভূর্তকি দিয়ে অর্ধেক দামে এ ছোলা দেওয়া হবে। বর্তমানে ছোলার বাজার দর একশ টাকার বেশি থাকলে ও তা ৫৫ টাকায় তাদের দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ ) সকালে ভারত থেকে ছোলা আমদানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল চেকপোস্ট উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার। পাঁচটি চালানের বিপরীতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে গত এক সপ্তাহে ১ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন ছোলা আমদানি করা হয়েছে। এসব ছোলার গুণগত মান নির্ণয় করে তা ছাড় দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি ভাবে ছোলা আমদানির পাশাপাশি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র আওতায় চার হাজার মেট্রিক টন কাঁচা ছোলা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, ছোলার আমদানি খরচ প্রতি কেজি ৮৫ টাকা পড়লেও ৪৫ টাকা ভর্তুকি দিয়ে ৫৫ টাকায় দরে খোলাবাজারে টিসিবির কার্ডধারীদের মধ্যে বিক্রি করা হবে। এছাড়া ও রমজানের মধ্যে ছোলার পাশাপাশি ডাল, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর বিক্রি করবে টিসিবি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্যের বাজারে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকার ২০২২ সাল থেকে এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে টিসিবির মাধ্যমে কম মূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি করে আসছে। এরই আওতায় এবার রমজানে সরবরাহের জন্য বেনাপোল বন্দর দিয়ে টিসিবির ডাল ও পেঁয়াজ আমদানি চলমান থাকলে ও এবার যোগহলো কাচাঁ ছোলা। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি পর্যায়ে ও ছোলা আমদানি অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সরকার সাধারণ ব্যবসায়ীদেরও শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচা ছোলা আমদানির সুযোগ দিলেও সে সুযোগের কোনো সুফল পাচ্ছে না সাধারণ ক্রেতারা। গত বছরে ছোলার কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা থাকলেও এবার কোনো কারণ ছাড়া তা বেড়ে ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। অবশেষে রমজান উপলক্ষে সরকার কম মূল্যে বিক্রির জন্য টিসিবির পণ্য তালিকায় কাঁচা ছোলা যুক্ত করে আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে।
সাধারণ ক্রেতারা আশা করছে সরকারিভাবে ছোলা আমদানির ফলে বাজারে ছোলার দাম কমে আসবে। ক্রেতারা জানান, রমজানের আগে নিত্যপণ্যের দাম কমলে মানুষ উপকৃত হবে। তবে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট না ভাঙলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।
বেনাপোল আমদানি রপ্তানি কারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, রোজায় টিসিবির অর্ধেক মূল্যের পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষ পেলে তাঁরা খুব উপকৃত হবেন।পাশাপাশি বেসরকারিভাবে ছোলাসহ অন্যান্য খাদ্যপন্য আমদানি করলে খুচরা বাজারে দাম কমে আসবে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম (ট্রাফিক) বলেন, পবিত্র রমজান উপলক্ষে ছোলাসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রবের আমদানি বেড়েছে। বন্দর থেকে যাতে এসব পন্য দ্রুত ছাড় হয় সে জন্য কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
টিসিবির একজন কার্ডধারী এতো দিন ৩০ টাকা কেজি দরে মাসে পাঁচ কেজি চাল, ১০০ টাকা লিটার দরে দুই লিটার ভোজ্যতেল এবং ৬০ টাকা কেজি দরে দুই কেজি মসুর ডাল কিনতেন। এখন থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে এক কেজি ছোলা যোগ হলো।
খুলনা গেজেট/ টিএ