করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে জনগনকে রক্ষা করতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে যশোরের প্রশাসন। মাস্ক না পরে ঘরের বাইরে গেলেই করা হবে জরিমানা। মাঠে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালতের জরিমানা থেকে রক্ষা পেতে মানুষ সময় পাবে সপ্তাহ খানেক। এই এক সপ্তাহ ধরে প্রচার-প্রচারণা চালাবে প্রশাসন। তারপর শুরু হবে অ্যাকশান।
শীতের মধ্যে করোনার দ্বিতীয় আঘাত আসতে পারে। এই আঘাত প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলছে প্রশাসনের প্রস্তুতি। এরই অংশ হিসেবে যশোর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয় সোমবার। এ সভায় ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
সভায় ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ চালু করতে যশোরের সরকারি, বেসরকারিসহ সব প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক যশোরে অবস্থিত এনজিও প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রচারণা এবং মাস্ক বিতরণে অংশগ্রহণের জন্যে আহ্বান জানান। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদেরকে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মাস্ক পরিধান শতভাগ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ হতে সব স্তরের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ‘সেবা পেতে মাস্ক পরিধান করুন’ লেখা ব্যানার প্রদর্শনের নির্দেশনা এসেছে বলে জানান সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন। এ সময় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবাদানের সক্ষমতা বেড়েছে জানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেন, ভেন্টিলেটর এবং আইসিইউ বেডের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইন অচিরেই কার্যকর করা হবে বলে জানান তত্ত্বাবধায়ক। সভায় সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার সৈয়দ মোহাম্মদ সাজ্জাদ কামালের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শেখ সালাউদ্দিন শিকদার, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সিটি ক্যাবলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোশারফ হোসেন বাবু, নাসিবের সভাপতি সাকির আলী, মোটরপার্টস ও টায়ারটিউব ব্যবসায়ী সমিতি, শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতি, ছিট কাপড় ব্যবসায়ী সমিতি, বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, সিটি প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতি, মুজিব সড়ক ব্যবসায়ী সমিতি, চুড়িপট্টি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, যশোর পেট্রোলিয়াম অ্যাসোসিয়েশন, ইজিবাইক মালিক সমিতি, বিউটি পার্লার মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও মেগাশপ হাটবাজারের স্বত্ত্বাধিকারী।
এদিকে, করোনা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে জেলা তথ্য অফিস শহরে প্রচারণা চালিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় প্রচারণায় বলা হয়, সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিসে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, শপিং মল, দোকান, হাটবাজার, গণপরিবহন, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, হকার, রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, হোটেল রেস্টুরেন্টসহ যেখানেই যাক না কেন মাস্ক পরতেই হবে। প্রচারণায় ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক পরিধানের অনুরোধ জানানো হয়। বিকেল পাঁচটায় জেলা তথ্য অফিসের সামনে থেকে প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা সিনিয়ির তথ্য অফিসার এএসএম কবীর।
খুলনা গেজেট / এমএম